স্মার্ট, উদ্ভাবনী এবং জ্ঞান-ভিত্তিক সমাজ গঠনে উন্নয়ন সহযোগীদের কাছে পাঁচটি মূল সহায়তা চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর বিশ্বাস, এসব সহযোগিতা একটি শান্তিপূর্ণ, ন্যায়সঙ্গত এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজকে উন্নীত করতে সহায়তা করবে।
স্বল্পোন্নত দেশগুলোর পঞ্চম জাতিসংঘ সম্মেলনে (এলডিসি-৫) সাইডলাইনে আজ (সোমবার) স্থানীয় সময় দুপুরে কাতার জাতীয় কনভেনশন সেন্টারে (কিউএনসিসি) ‘ইনভেস্ট ইন রিসার্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ইন এলডিসি ফর স্মার্ট অ্যান্ড ইনোভেটিভ সোসাইটিস’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে তিনি এই আহ্বান জানান।
প্রথম সহায়তা হিসেবে শেখ হাসিনা জলবায়ু সংক্রান্ত পদক্ষেপসহ স্বল্পোন্নত দেশগুলিতে কার্যকর প্রযুক্তি হস্তান্তরে আন্তর্জাতিক বেসরকারি খাতকে যথাযথ প্রণোদনা প্রদান করার কথা বলেন।
দ্বিতীয়ত, স্বল্পোন্নত দেশগুলোতে ব্রডব্যান্ড বিভাজন এবং প্রযুক্তিগত বৈষম্য কমাতে ডিজিটাল অবকাঠামোতে বিনিয়োগ সহায়তা।
তৃতীয়ত, স্বল্পোন্নত দেশগুলো যেসব সমস্যা ও চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ছে সেগুলো মোকাবিলায় গবেষণা পেশাদার ও প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধি।
চতুর্থত, উত্তরণের পরেও বিশেষ করে ফার্মাসিউটিক্যালস এবং কৃষি-রাসায়নিকের জন্য ট্রিপস চুক্তির অধীনে এলডিসি মওকুফের ধারাবাহিকতা অব্যহত রাখা।
পঞ্চম সহায়তার ব্যাপারে তিনি বলেন, স্বল্পোন্নত দেশগুলোতে উদ্ভাবন এবং উন্নয়ন দুটি’র জন্যই সহায়ক একটি বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদ ব্যবস্থা বিকাশে সহায়তা।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘২০০৯ সালে তাঁর সরকার জনগণের কাছে ২০২১ সালের মধ্যে একটি ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলার অঙ্গীকার করেছিলেন। ওই সময়ে এটিকে রূপকথা বলেই মনে হয়েছিল। কিন্তু কোভিড-১৯ মহামারি প্রমাণ করেছে যে—আমরা আমাদের অঙ্গীকার রক্ষা করতে পারি।’
শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘এই মহামারি আমাদের শিক্ষা দিয়েছে যে—এলডিসিভুক্ত দেশগুলোকে বৈজ্ঞানিক গবেষণা ও প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনে বিনিয়োগের জন্য আর অপেক্ষা করা উচিৎ নয়। তাদের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে উৎপাদন সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে এ ধরনের বিনিয়োগ করা অপরিহার্য।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যে গবেষণা ও উন্নয়নের জন্য এলডিসিগুলোর গড় জিডিপি ব্যয় এখনও শূন্য দশমিক ৬ শতাংশের নিচে রয়েছে ও তাদের মধ্যে মাত্র কয়েকটি বৈশ্বিক উদ্ভাবন সূচকে রয়েছে। কিন্তু, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের আবির্ভাবের সঙ্গে স্বল্পোন্নত দেশগুলো পিছিয়ে থাকার মতো অবস্থায় নেই।’
প্রধানমন্ত্র বলেন, ‘আমাদের তরুণদের ভবিষ্যৎ কাজে সম্পৃক্ত করা উচিত। এর জন্য আমাদের অর্থপূর্ণ বৈশ্বিক অংশীদারিত্ব দরকার।’ তিনি বলেন, ‘এলডিসি উত্তরণের জন্য বাংলাদেশ ২০২১ সালের মধ্যে তিনটি মানদণ্ডের সবগুলোতেই তার যোগ্যতা প্রমাণ করবে।’
