শান্তিময় পৃথিবীর প্রত্যাশায় বাংলা নববর্ষকে স্বাগত জানিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে মঙ্গল শোভাযাত্রা। বাহারি রঙের পাঞ্জাবি ও শাড়ি পরে এতে যোগ দিতে দেখা গিয়েছে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে। শুক্রবার (১৪ এপ্রিল) সকাল ৯টায় শোভাযাত্রাটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা থেকে শুরু হয়ে শাহবাগ মোড় ঘুরে আবার চারুকলায় গিয়ে শেষ হয়।
উৎসবপ্রিয় বাঙালির প্রাণের উৎসব বাংলা বর্ষবরণের প্রধান অনুষঙ্গ মঙ্গল শোভাযাত্রা। এবারের মঙ্গল শোভাযাত্রার প্রতিপাদ্য রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গান থেকে নেওয়া-‘বরিষ ধরা মাঝে শান্তির বারি।’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান ও সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ শোভাযাত্রায় নেতৃত্ব দেন।
সকাল ৯টা বাজার আগেই বৈশাখী সাজে বিভিন্ন বয়সের নারী পুরুষেরা চারুকলা প্রাঙ্গণে জড়ো হন। মুখে রংতুলিতে লেখা ‘শুভ নববর্ষ ১৪৩০’, ‘এসো হে বৈশাখ’। পুরুষরা লাল-সাদা পাঞ্জাবি, মাথায় গামছা, আর লুঙ্গি পরে নিজেকে পুরো বাঙালিয়ানায় ফুটিয়ে তুলেন। নারীরা পড়েছেন বৈশাখী শাড়ি। ছোট্ট শিশুরাও অভিভাবকদের সঙ্গে উৎসবে যোগ দেন। শোভাযাত্রায় আবহমান বাংলার ইতিহাস-ঐতিহ্যের সঙ্গে সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহের প্রতীকী উপস্থাপনের নানা বিষয় স্থান পায়।
কারো হাতে জাতীয় পতাকা, কারো হাতে চারুকলার তৈরি মুখোশ। এছাড়া র্যালির অগ্রভাবে টেপা পুতুল, ময়ূর, নীল গাই, হাতি, ভেড়ার বাচ্চা ও সর্বশেষ বাঘের প্রতিকৃতি ছিল।
বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন রমজান মাস হওয়ায় এবারের পহেলা বৈশাখের সকালে পান্তা-ইলিশের আয়োজন হয়নি। আর প্রচণ্ড তাপদাহের কারণে শিশু ও বয়স্কদের উপস্থিতি কিছুটা কম। তবে পুরোনো গ্লানি, হতাশা আর মলিনতাকে পেছনে ফেলে নতুন উদ্যমে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যাশায় নতুন বছর বরণ করতে কোনো অনীহা ছিল না তরুণদের মাঝে। এছাড়া শোভাযাত্রায় অংশ নিতে প্রতি বছরের ন্যায় বিভিন্ন দেশের নাগরিকরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে উপস্থিত হন।
বরাবরের মতো নিরাপত্তা নিয়ে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ব্যাপক নিরাপত্তার ব্যবস্থা করে। র্যালির সম্মুখভাগে সোয়াতের টিম, র্যাব, পুলিশের চৌকস দল অবস্থান নেয়।