মানুষের দৃষ্টি সরাতেই সরকার নিজেই আগুন লাগাচ্ছে, উল্টো বিএনপির ওপর দায় চাপানোর চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সারের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে আজ (সোমবার) প্রেসক্লাবে কৃষকদলের বিক্ষোভ সমাবেশ এসব কথা বলেন তিনি। সারের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে জাতীয়তাবাদী কৃষকদলের উদ্যোগে এই বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

আগুন লাগার ঘটনায় সরকারকে দোষারোপ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, প্রতিদিন আগুন লাগছে। এই আগুন লাগার পেছনে আপনারা (সরকার) রয়েছেন। মানুষের যে দাবি উঠেছে সারের দাম কমাও, চালের দাম কমাও, তেলের দাম কমাও, আমাদের বাঁচতে দিতে হবে, আমাদের একটি ভালো নির্বাচন দিতে হবে, ভোটের অধিকার দিতে হবে। এই দাবিগুলোকে পাশ কাটানোর জন্য মানুষের দৃষ্টি ভিন্ন দিকে নেওয়ার জন্য আপনারা এই আগুন লাগাচ্ছেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, পরিষ্কার করে বলছি মূল যে জায়গাটা সেটা হচ্ছে এই সরকারকে সরাতে হবে। সরকার যতদিন থাকবে ততদিন মানুষের ওপর অত্যাচার বাড়বে, মানুষের ওপর নির্যাতন নিপীড়ন চলতেই থাকবে, মানুষকে বিনা দোষে গ্রেফতার করে নিয়ে যাবে। ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট যোগ করেছে যাতে সাংবাদিক ভাইয়েরা লিখতে না পারেন।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, সবাই দেশকে রক্ষা করার জন্য একজোট হয়েছি। আজকের এই আন্দোলন শুধু বিএনপিকে ক্ষমতায় বসানোর জন্য নয়, জোটকে ক্ষমতায় বসানোর জন্য নয়। এই আন্দোলন জনগণকে তার ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য। এদেশের মালিক হচ্ছে জনগণ। সেই মালিকানা জনগণকে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য আমরা আন্দোলন করছি। ইনশাআল্লাহ এই আন্দোলনে আমরা জিতবই।

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘আবার শুরু হয়েছে অত্যাচার নির্যাতন গ্রেফতার। কিন্তু কোন গ্রেফতার হত্যা নির্যাতন আমাদেরকে আটকে রাখতে পারবে? দুর্বার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে কৃষক ভাইদের একসঙ্গে করে শ্রমিক ভাইদের একসঙ্গে করে সেই বিজয় আমরা ছিনিয়ে আনব। আগামীতে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আমরা দুর্বার গণআন্দোলন গড়ে তুলব। আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এই সরকারকে সরিয়ে সত্যিকার অর্থে একটি নির্বাচন যে নির্বাচনে জনগণ ভোট দিতে পারবে যে নির্বাচনে মানুষ তার প্রতিনিধিত্ব নির্বাচিত করতে পারবে, সে নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করব।

সরকারের উদ্দেশ্য করে ফখরুল বলেন, অবিলম্বে এখনো সময় আছে সারের দাম কমান। আর ধানের দাম বাড়িয়ে দেন। তা না হলে জনগণই আপনাদের ফয়সালা করে দেবে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, সরকার দেশের সমস্ত খাতগুলোকে ধ্বংস করে দিয়েছে। কৃষিকে ধ্বংস করে দিয়েছে। শিল্প, অর্থনীতিকে ধ্বংস করেছে। লুটপাটের রাজত্ব কায়েম করেছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে এই সরকার একটি গণবিরোধী সরকার, আজকে সরকার সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। এ সরকার আজকে আমাদের সমস্ত অর্জনগুলোকে ধ্বংস করে দিয়েছে। সাধারণ মানুষের যারা খেটে খায়, পরিশ্রম করে খায় তাদের জীবন দুর্বিষহ করে তুলেছে। প্রতিবাদ করলেই গুলি, প্রতিবাদ করলেই মামলা, প্রতিবাদ করলেই গ্রেফতার। মানুষের প্রতি তাদের কোনো দয়ামায়া নেই কারণ তারা জনগণের দ্বারা নির্বাচিত হয়নি।

বিক্ষোভ সমাবেশের সভাপতিত্ব করেন কৃষক দলের সভাপতি কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিন। সঞ্চালনা করেন কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন- কৃষক দলের কেন্দ্রীয় নেতা খলিলুর রহমান ইব্রাহিম, শাহাদাৎ হোসেন বিপ্লব, মিজানুর রহমান লিটু প্রমুখ।