সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলায় তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলার ঘটনায় দায়ের হওয়া তিনটি মামলার মধ্যে অস্ত্র ও বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের দুটি মামলার রায়ে বিএনপির সাবেক এমপি হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ চারজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৪৪ জনের সাত বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।

আজ মঙ্গলবার (১৮ই এপ্রিল) সকালে সাতক্ষীরার স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক বিশ্বনাথ মণ্ডল এ রায় ঘোষণা করন।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলার ঘটনায় হওয়া তিনটি মামলার মধ্যে একটি মামলায় ২০২১ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি রায় দেন আদালত। এতে বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ ৫০ নেতা-কর্মীকে ৪ থেকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেন সাতক্ষীরার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হুমায়ুন কবির। সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের মধ্যে জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি হাবিবুল ইসলামসহ কারাগারে রয়েছেন ৩৭ জন। জামিনে রয়েছেন দুজন। এ ছাড়া নয়জন পলাতক ও দুজন কারাগারে মারা গেছেন।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০০২ সালের ৩০শে আগস্ট সকাল ১০টার দিকে তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা কলারোয়া উপজেলার চন্দনপুর ইউনিয়নের হিজলদী গ্রামের এক মুক্তিযোদ্ধার ধর্ষিতা স্ত্রীকে দেখতে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে আসেন। সেখান থেকে যশোরে ফিরে যাওয়ার পথে সকাল ১১টা ৪০ মিনিটে কলারোয়া উপজেলা বিএনপি অফিসের সামনে রাস্তার ওপর জেলা বিএনপির সভাপতি ও তৎকালীন সাংসদ হাবিবুল ইসলামের হাবিব ও বিএনপি নেতা রঞ্জুর নির্দেশে বিএনপি ও যুবদলের নেতাকর্মীরা দলীয় অফিসের সামনে একটি যাত্রীবাহী বাস (সাতক্ষীরা-জ-০৪-০০২৯) রাস্তার ওপর আড় করে দিয়ে তার গাড়িবহরে হামলা চালান।

এ সময় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রকৌশলী শেখ মুজিবুর রহমানকে গাড়ি থেকে টেনেহিঁচড়ে নামিয়ে মারপিট করা হয়। তার কাছে থাকা সাড়ে ১১ হাজার টাকা ছিনতাই করা হয়। মারিপট করে জখম করা হয় নেত্রীর গাড়িবহরে থাকা আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল হক রাসেল, রমনা এলাকার যুব মহিলা লীগের নেত্রী ফতেমা জামান সাথী, আওয়ামী লীগ কর্মী আব্দুল মতিনসহ কয়েকজন। এ সময় কয়েকজন সাংবাদিক থানার ভেতরে আশ্রয় নিলেও তাদেরকেও পিটিয়ে জখম করা হয়। ভেঙে দেওয়া হয় ক্যামেরা। ছিনিয়ে নেওয়া হয় মোবাইল, ঘড়ি ও টাকা। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর গাড়িবহরের ঢাকা মেট্রো-গ-১২-৫৩৪২ পাজেরো গাড়িটি ভাঙচুর করা হয়।

এ ঘটনায় কলারোয়া থানা মামলা না নেওয়ায় দোসরা সেপ্টেম্বর কলারোয়া উপজেলা (আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক) মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার মোসলেমউদ্দিন বাদী হয়ে ২৭ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ৭০/৭৫ জনকে সাতক্ষীরায় নালিশি আদালত ‘ক’ অঞ্চলে একটি মামলা (সিআরপি-১১৭১/০২) দায়ের করেন। মামলায় ১৮ জনকে সাক্ষী করা হয়।