গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীরের মনোনয়নপত্র বাতিল হলেও তার মায়ের মনোনয়নপত্র বৈধ বলে জানিয়েছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। রোববার (৩০ এপ্রিল) গাজীপুরের বঙ্গতাজ মিলনায়তনে অবস্থিত রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে তার মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়।

রোববার (৩০ এপ্রিল) গাজীপুরের রিটার্নিং অফিসার ফরিদুল ইসলাম এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের সিআইবি রিপোর্ট অনুযায়ী জাহাঙ্গীর আলম যে প্রতিষ্ঠানের জন্য জামিনদার হয়েছিলেন, সেই প্রতিষ্ঠানটি ঋণ খেলাপি হওয়ায় তার মনোনয়ন বাতিল করা হলো।

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ের দিন ধার্য ছিল আজ। এই সিটি নির্বাচনে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন আগামী ৮ মে। পরদিন ৯ মে প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে।

গাজীপুর সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে স্বতন্ত্র হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন মো. জাহাঙ্গীর আলম। একই পদে প্রার্থী হিসেবে তার মা জায়েদা খাতুনকেও দাঁড় করিয়েছেন।

গত ১৫ এপ্রিল ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি মনোনয়ন বোর্ড গাজীপুর সিটি নির্বাচনে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্লা খানকে মনোনয়ন দেয়। ইতোমধ্যেই দলীয় প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানের নির্বাচনসংক্রান্ত কর্মকাণ্ড দেখভালের জন্য ২৮ সদস্যের কেন্দ্রীয় বিশেষ কমিটিও গঠন করেছে আওয়ামী লীগ। এর টিম লিডার করা হয়েছে মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রমকে। আর সমন্বয়ক করা হয়েছে দলের ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক কার্যক্রম দেখভালের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজমকে। এছাড়াও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এই কমিটির উপদেষ্টা হিসেবে আছেন।

বিশেষ এই কমিটির সদস্যরা হলেন- দলের সভাপতিমণ্ডলীর চার সদস্য লে. কর্নেল (অব.) ফারুক খান, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, সিমিন হোসেন রিমি, সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন, আইনবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট নজিবুল্লাহ হিরু, দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, মহিলাবিষয়ক সম্পাদক জাহানারা বেগম, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস, বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, শিক্ষা ও মানবসম্পদ-বিষয়ক সম্পাদক শামসুন নাহার, শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান, সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, উপপ্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক সৈয়দ আবদুল আউয়াল শামীম, উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান, কার্যনির্বাহী সদস্য অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী আরাফাত, অ্যাডভোকেট তারানা হালিম, অ্যাডভোকেট সানজিদা খানম, আনোয়ার হোসেন, সাহাবুদ্দিন ফরাজী, ইকবাল হোসেন অপু, সাঈদ খোকন, উপাধ্যক্ষ রেমন্ড আরেং এবং নির্মল কুমার চ্যাটার্জি।

ক্ষমতার অপব্যবহার, বিধিনিষেধ পরিপন্থি কার্যকলাপ, দুর্নীতি ও ইচ্ছাকৃত অপশাসনের অভিযোগ এনে ২০২১ সালের নভেম্বরে জাহাঙ্গীরকে মেয়র পদ থেকে সাময়িক বহিষ্কার করে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়। পরে দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে তাকে আওয়ামী লীগ থেকেও বহিষ্কার করা হয়। এরপর অবশ্য তাকে শর্তসাপেক্ষে ক্ষমাও করে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ। এবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন তিনি। তবে আজ মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ের দিনে ঋণ খেলাপির অভিযোগে জাহাঙ্গীরের মনোনয়ন বাতিল হলো।