প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সরকার ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে।ইনস্টিটিউশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশের (আইইবি) ৬০তম সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তৃতা দেওয়ার সময় তিনি বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ আসছে। আমরা ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রগুলোকে প্রস্তুত রেখেছি ও ঝড়টি মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছি।’

ঘূর্ণিঝড়ের সময় পানি জমে গেলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সুতরাং সেই সময়ে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের কার্যক্রম বন্ধ রাখতে হবে।’

তিনি বলেন, এই পদক্ষেপ (গ্যাস ও বিদ্যুৎ বন্ধ) সাময়িক দুর্ভোগ সৃষ্টি করলেও মানুষের জীবন রক্ষা পাবে।

দেশের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে প্রকৌশলীসহ সবাইকে আন্তরিকভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমরা (আওয়ামী লীগ সরকার) আসার পর থেকে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা আশা করবো, আগামীতে এ উন্নয়নের ধারাটা যেন চলমান রাখতে পারি সেই বিষয়ে সবাই আন্তরিক থাকবেন। সেইভাবে আপনারা কাজ করবেন। ’

স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় পুনর্ব্যক্ত করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চাই; যেখানে জনগণ হবে স্মার্ট জনগোষ্ঠী, স্মার্ট অর্থনীতি, স্মার্ট উৎপাদন ব্যবস্থা থাকবে। চিকিৎসা থেকে শুরু করে সব ক্ষেত্রে দেশের মানুষ স্মার্ট হবে সেটাই আমরা চাই। দক্ষ জনগোষ্ঠী আমরা গড়ে তুলতে চাই। কোনো জায়গা থেকে আমরা পিছিয়ে থাকবো না। ’

প্রকৌশলীদের দেশের মানুষের কল্যাণের কথা চিন্তা করে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যে যেখানে কাজ করবেন নিজের আত্মবিশ্বাস নিয়ে, আত্মমর্যাদা বোধ নিয়ে, দেশকে ভালোবেসে, দেশের মানুষের কল্যাণের কথা চিন্তা করে কাজ করতে হবে।

কোন প্রকল্প দেশের মানুষের জন্য কতটা দরকার তা বিবেচনা করে সরকার প্রকল্প গ্রহণ করে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা যে প্রকল্প নেই আগে চিন্তা করি দেশের মানুষ কতটুকু উপকার পাবে। আর সেই প্রকল্প শেষ হয়ে গেলে রিটার্ন কী আসবে। কত দ্রুত আসবে। ’

তিনি বলেন, ‘কত দেশ, বিশাল অংকের টাকা দিয়ে কোনো প্রকল্প দিলে আমি কিন্তু সেই প্রকল্প গ্রহণ করি না। সেটা আপনাদের আমি জানিয়ে দিচ্ছি। সেটা আমি করবোও না। আমার দেশের জন্য প্রযোজ্য যেটা আমরা সেটাই করবো। ’

সামরিক শাসকদের সময় প্রকল্পের নামে টাকা লুট হতো জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এক সময় সামরিক শাসকদের সময় কী ছিল, অনেক টাকা দিয়ে প্রজেক্ট বানায়ে, ওই টাকা পরের কাছে তুলে দেওয়া এবং তাদের কাছ থেকে কমিশন খাওয়া! আমার দেশের টাকা আমি তুলে দেব আরেকজনের হাতে? আর তার কাছ থেকে আবার কমিশন খাব? ঘুষ নেব? এ ধরনের মানসিকতা কেন থাকবে! এটাতো আত্মহননের সামিল। বরং একটা টাকা বাঁচাতে পারি কি না সেই চেষ্টাটাই করতে হবে। ’

অনেক দেশ পদ্মা সেতুর মতো সেতু নির্মাণে বাংলাদেশের সহযোগিতা চায় জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করে আমাদের সক্ষমতা শুধু দেখাইনি। আমাদের যারা সেখানে কাজ করেছে প্রকৌশলী থেকে শুরু করে সবারই নিজস্ব অভিজ্ঞতা সৃষ্টি হয়েছে। এখন যেমন অনেক দেশ আমাদের কাছে আসছে, ব্রাজিল তাদের অ্যামাজনে ব্রিজ বানাতে চায়। আমরা বলেছি আমাদের লোকজন রেডি আছে যখনই দরকার আমরা সহযোগিতার জন্য প্রস্তুত। ’

আইইবির প্রেসিডেন্ট প্রকৌশলী মো. নুরুল হুদার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন- আইইবির সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী মো. শাহাদাৎ হোসেন (শিবলু), আইইবি ঢাকা সেন্টারের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মোল্লা মোহাম্মদ আবুল হোসেন, সম্মানী সম্পাদক প্রকৌশলী কাজী খায়রুল বাশার।