নিখোঁজ টাইটান সাবমার্সিবলের হারিয়ে যাওয়া এলাকায় ধ্বংসাবশেষ মিলেছে বলে জানিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কোস্টগার্ড। একজন বিশেষজ্ঞ এরই মধ্যে বিবিসিকে জানিয়েছেন যে, ধ্বংসাবশেষের মধ্যে পাওয়া গেছে টাইটানের পেছনের অংশ।

ডাইভ এক্সপার্ট ডেভিড মিয়ার্ন্স জানিয়েছেন যে, ধ্বংসাবশেষের মধ্যে টাইটানের ‘একটি অবতরণ ফ্রেম এবং পিছনের আবরণ’ রয়েছে।

টাইটান জাহাজের যাত্রীদের বন্ধু মিয়ার্ন্স। তিনি এক্সপ্লোরার্স ক্লাবের সভাপতি। এই ক্লাব ডাইভিং এবং উদ্ধার কাজের সঙ্গে যুক্ত।

তবে অনুসন্ধানে অংশ নেওয়া কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রের একাধিক বাহিনীর কেউই এখনও ধ্বংসাবশেষে টাইটানের অংশ রয়েছে কি না সে বিষয়ে নিশ্চিত করেনি। মার্কিন কোস্টগার্ড জানিয়েছে যে, সব তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করা হচ্ছে।

মার্কিন কোস্টগার্ড ওই এলাকায় ধ্বংসাবশেষ পাওয়ার কথা জানানোর পর সাবমেরিন টাইটানের কোম্পানি ওশানগেটের সহ-প্রতিষ্ঠাতা জানিয়েছেন যে, দুর্ঘটনার কারণে টাইটান বিস্ফোরিত হয়ে থাকতে পারে।

ওশানগেটের সহ-প্রতিষ্ঠাতা গুইলারমো সোহেনলিন বিবিসিকে এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন যে, সাবমেরিনটির ‘তাৎক্ষণিক বিস্ফোরণ’ হতে পারে।

টাইটানের হারিয়ে যাওয়া এলাকায় ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পাওয়ার পর এমন মন্তব্য করেছেন গুইলারমো সোহেনলিন। তিনি বলেন, সরেজমিনে কিছু থাকলে তিনি অবাক হবেন না।

ওশানগেটের সহ-প্রতিষ্ঠাতা বলেন যে, একটি বিপর্যয় হওয়ার সম্ভাবনা ছিল।

তার কথায়, সমুদ্রের গভীরতায় যেকোনো সাবমেরিনের ওপর চাপ এত বেশি থাকে যে, যদি কোনো কারণে সেটি ব্যর্থ হয় বা দুর্ঘটনায় পড়ে তাহলে তাৎক্ষণিক বিস্ফোরণ হতে পারে। যদি এমনটি হয়ে থাকে তাহলে সেটি চারদিন আগেই ঘটে থাকতে পারে।

অপরদিকে বিবিসির বিজ্ঞান প্রতিবেদক জনাথন আমোস ধ্বংসাবশেষ পাওয়ার পর বলেছেন যে, এটি কিছু হতে পারে। আবার নাও হতে পারে।

তিনি বলেন, উদ্ধার অভিযানের পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের কোস্ট গার্ড তেমন কিছুই বলেনি। তাই এই খবর তাৎপর্যপূর্ণ হতে পারে।

তিনি জানিয়েছেন যে, অনেক বিশেষজ্ঞ বলেছেন যে, সাবমেরিন টাইটান ব্যর্থ হলে এটি বিপর্যয়কর বিস্ফোরণের শিকার হতে পারে।

ধ্বংসাবশেষ পাওয়ার বিষয়ে কথা বলতে সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে মার্কিন কোস্ট গার্ড। বোস্টনে মার্কিন কোস্টগার্ডের সদর দফতরে স্থানীয় সময় দুপুর তিনটায় (বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত একটায়) এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে কথা বলবেন রিয়ার অ্যাড. জন মাগার, প্রথম কোস্ট গার্ড জেলা কমান্ডার এবং ক্যাপ্টেন জেমি ফ্রেডেরিক, প্রথম কোস্ট গার্ড জেলা প্রতিক্রিয়া সমন্বয়কারী।

গত রোববার কানাডার সময় সকাল ছয়টায় (বাংলাদেশ সময় বিকেল ৪টা) সাগরের নিচে যাত্রা শুরু করে সাবমেরিনটি। এই সময় যানটিতে থাকা ৫ জনের জন্য ৯৬ ঘণ্টার অক্সিজেন মজুদ ছিল। সেই অনুযায়ী সবকিছু ঠিক থাকলে, কানাডার সময় বৃহস্পতিবার সকাল ছয়টা (বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টা) পর্যন্ত যানটিতে অক্সিজেন থাকার কথা। সেই সময় বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় বিকেল চারটায় শেষ হয়েছে।

প্রায় দুই ঘণ্টা পর ওপরে থাকা জাহাজের সঙ্গে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় সাবমেরিনটির। সবশেষ ডাটা অনুযায়ী, সাবমেরিনটি তিন হাজার আটশ মিটার গভীরে ছিল।