ভয়াবহ রূপ নিয়েছে ভারতে বন্যা পরিস্থিতি। ভারি বৃষ্টিপাতে তলিয়ে গেছে দেশটির উত্তরাঞ্চলের জনপদ। টানা চার দিন ধরে ভারী বৃষ্টিতে সৃষ্ট বন্যা এবং ভূমি ধসে ভারতের উত্তরাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১০০ ছাড়িয়েছে। সবেচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে হিমাচল প্রদেশ। রাজ্যটিতে মঙ্গলবার মৃত্যু হয়েছে ৩১ জনের। ভারতের অন্তত ২৪টি রাজ্যে জারি করা হয়েছে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস। এছাড়া প্রবল বৃষ্টিতে গত ১০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ স্তরে বেড়েছে দিল্লির যমুনা নদীর পানি।
এর ফলে হিমাচল প্রদেশ ছাড়াও দিল্লি, উত্তরাখণ্ড, পাঞ্জাব, হরিয়ানা, রাজস্থানে বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এর মধ্যে হিমাচল প্রদেশের অবস্থা সবচেয়ে শোচনীয়। সেখানে পাহাড় ধস, সড়কে ভাঙন ও সেতু ভেসে যাওয়ার মতো ঘটনা ঘটছে।
হিমাচলের মান্ডি, উনা, হামিরপুর, বিলাসপুর, চম্বা, কাংড়া এবং কুলু, সিরমুর, কিন্নৌর, শিমলা এলাকায় ভয়াবহ পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এ রাজ্যের নদীগুলোর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে বইছে। ইরাবরতী, বিতস্তা, শতদ্রু এবং চন্দ্রভাগা নদী ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। সোলান উপত্যকায় রোববার ৫০ বছরের রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে বৃষ্টি। ১৩৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে সোলানে।
হিমাচলের আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে খবর, গত ১ জুলাই থেকে ১১ জুলাই পর্যন্ত বৃষ্টি হয়েছে ২৪৯.৬ মিলিমিটার। যা স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের তুলনায় ২২৬ শতাংশ বেশি। কিন্নৌরে ৫০০ শতাংশ বেশি বৃষ্টি হয়েছে। সোলানে ৪২৬ শতাংশ, সিরমুরে ৩৬৭ শতাংশ, শিমলায় ৩৬০ শতাংশ, বিলাসপুরে ৩২৫ শতাংশ, লাহুল এবং স্পিতিতে ২৩৩ শতাংশ, মান্ডিতে ১৩০ শতাংশ। দুর্যোগের কারণে হিমাচলের বিভিন্ন প্রান্তে আটকে রয়েছে ৩০০ পর্যটক। রাজ্যের ৪১টি জায়গায় ধস এবং একটি জায়গায় মেঘভাঙা বৃষ্টি হয়েছে।
ভারতের আবহাওয়া অফিস ২৪টি রাজ্যে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে। তারা জানিয়েছে, গত কয়েকদিন ধরে টানা বৃষ্টি হচ্ছে হিমাচল, উত্তরাখণ্ড, পঞ্জাব এবং দিল্লিতে। বৃষ্টির পরিমাণ সামান্য কমবে হিমাচলে। তবে বৃষ্টি পরিমাণ বাড়বে উত্তরাখণ্ড, পশ্চিম উত্তরপ্রদেশ এবং বিহারে।
দিল্লিতে যমুনা নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে বইছে। পানির স্তর ২০৫ মিটার ছাড়িয়ে গেছে। হরিয়ানার হাতিকুণ্ড বাঁধ থেকে পানি ছাড়ায় দিল্লির নিচু এলাকাগুলো প্লাবিত হয়েছে। দিল্লিতে বৃষ্টি ও বন্যা পরিস্থিতির কারণে মৃত্যু হয়েছে পাঁচ জনের।