ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল আলম ওরফে  হিরো আলমের ওপর হামলার ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে বিবৃতির জেরে ১৩টি মিশনের রাষ্ট্রদূতদের তলব করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। আগামীকাল বুধবার (২৬ জুলাই) ঢাকায় কর্মরত এই ১৩টি মিশনের প্রধানকে তলব করা হয়েছে।

হিরো আলমের ওপর হামলার ঘটনায় গত ১৯ জুলাই ঢাকার ১৩ দূতাবাস ও হাইকমিশন বিবৃতি দেয়। দেশগুলো হলো—কানাডা, ডেনমার্ক, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, নেদারল্যান্ডস, নরওয়ে, স্পেন, সুইডেন, সুইজারল্যান্ড, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ডেলিগেশন।

গত ১৭ জুলাই ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচন হয়। ভোট গ্রহণ শেষ হওয়ার ঘণ্টাখানেক আগে বনানীর একটি ভোটকেন্দ্রের বাইরে হিরো আলমকে মারধর করেন কিছু তরুণ। পরদিন এ ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়ে টুইট করেছিলেন বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইস। পরে ঢাকায় অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ ১১টি দেশ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের দূতাবাস এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দেয়।

বিবৃতির জেরে ২০ জুলাই ঢাকায় জাতিসংঘের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক সমন্বয়কারী শেলডন ইয়েটকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করে অসন্তোষ জানায় সরকার। ভবিষ্যতে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে জাতিসংঘ যেন প্রকাশ্যে এ ধরনের মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকে, সরকারের এমন প্রত্যাশার কথাও তাকে জানিয়ে দেওয়া হয়।

এর আগের দিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন হিরো আলমের ঘটনায় বিদেশি মিশনের বিবৃতি দেওয়া নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। যুক্তরাষ্ট্রে মানুষ মারা গেলে তারা এভাবে বিবৃতি দেয় কি না, সে প্রশ্ন তুলেছিলেন তিনি। এ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্ন করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওই দিন বলেছিলেন, ‘আপনারা কেন তাদের জিজ্ঞাসা করেন না? যখন তাদের দেশে লোক মারা যায়, তখন কেন বিবৃতি দেয় না, আর বাংলাদেশ হলেই মগের মুল্লুক পাইছে ওরা।’

উল্লেখ্য, বিভিন্ন বিষয়ে অসন্তুষ্ট হয়ে বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের তলবের বিষয়টি কূটনৈতিক কর্মকাণ্ডের একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। বাংলাদেশ আগেও নানান ইস্যুতে বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের তলব করেছে। তবে সাম্প্রতিক ইতিহাসে জাতিসংঘের কোনো প্রতিনিধিকে তলব করে অসন্তোষ প্রকাশের নজির নেই।