বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক প্লেন চলাচল সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। এ সমঝোতা স্মারক সইয়ের ফলে বাংলাদেশের যেকোনো পয়েন্ট থেকে সৌদি আরবের যেকোনো আন্তর্জাতিক পয়েন্টে ফ্লাইট পরিচালনা যাবে। বুধবার (২৩ আগস্ট) সচিবালয়ে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক অনুষ্ঠানে দুই দেশের মধ্যে এই সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে।

বিমান চলাচল সংক্রান্ত নতুন সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের ফলে সৌদি আরব কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে বাংলাদেশের মনোনীত বিমান সংস্থা বাংলাদেশের যেকোনো পয়েন্ট হতে সৌদি আরবের যে কোনো আন্তর্জাতিক পয়েন্টে ফ্লাইট পরিচালনা করতে পারবে।

উল্লেখ্য, ২০১২ সালের সম্পাদিত সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী বর্তমানে বাংলাদেশি বিমান সংস্থা সৌদি আরবের শুধু জেদ্দা, রিয়াদ, দাম্মাম ও মদিনা এই চারটি বিমানবন্দরে ফ্লাইট পরিচালনা করার সুযোগ পাচ্ছে।

এছাড়াও, নতুন স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী বাংলাদেশ হতে সৌদি আরবে পরিচালিত ফ্লাইটের ফ্রিকোয়েন্সি বৃদ্ধি পাবে। বর্তমানে নির্ধারিত ৪৯টি যাত্রী ও কার্গো ফ্লাইট ফ্রিকোয়েন্সির পরিবর্তে ৪৯টি যাত্রী ফ্লাইট ফ্রিকোয়েন্সি এবং নতুন করে ২১টি কার্গো ফ্লাইটের ফ্রিকোয়েন্সি সুবিধা পাবে বাংলাদেশের বিমান সংস্থাগুলো। ২১টি কার্গো ফ্রিকোয়েন্সির ক্ষেত্রে ফিফথ ফ্রিডম ট্রাফিক রাইটসের আওতায় চারটি মধ্যবর্তী অথবা দূরবর্তী পয়েন্ট ব্যবহার করে ফ্লাইট পরিচালনা করা যাবে। এ চারটি পয়েন্ট পরবর্তীতে নির্ধারণ করা হবে।

বাংলাদেশ পক্ষে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী এবং সৌদি আরবের পক্ষে সৌদি জেনারেল অথরিটি অব সিভিল এভিয়েশনের প্রেসিডেন্ট আব্দুল আজিজ আল দুয়াইলেজ সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেন।

এ সময় সৌদি আরবের হজ ও ওমরাহ মন্ত্রী ড. তৌফিক বিন ফাজওয়ান আল রাবিয়াহ, বাংলাদেশে নিযুক্ত সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত ঈসা ইউসেফ ঈসা আল দুলাইহান, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোকাম্মেল হোসেন, বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমানসহ দুই দেশের বিভিন্ন পর্যায়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।

চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বলেন,  বাংলাদেশ এবং সৌদি আরবের মধ্যে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারকের ফলে দুই দেশের এভিয়েশন খাতে পারস্পরিক সহযোগিতার ক্ষেত্র আরও বৃদ্ধি পাবে। এটি দুই দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্যসহ সহযোগিতার সকল ক্ষেত্রে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পে নতুন সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে বাংলাদেশের পর্যটন খাতে দুই দেশের সহযোগিতার অনেক ক্ষেত্র রয়েছে। আমাদের বন্ধু রাষ্ট্র হিসেবে সৌদি আরব বাংলাদেশের পর্যটন খাতে বিনিয়োগ করলে তাকে আমরা স্বাগত জানাব।

সৌদি আরবের হজ ও ওমরাহ মন্ত্রী তার বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে সৌদি আরবের বন্ধুত্ব অত্যন্ত দৃঢ়। সৌদি আরবে একটি বড় বাংলাদেশি সম্প্রদায়ের বসবাস রয়েছে যারা দুই দেশের উন্নয়নেই ভূমিকা রাখছেন। নতুন সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী বিমান চলাচলের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় দুই দেশই এর সুফল পাবে।

সৌদি আরবের মন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশের আন্তরিক আতিথেয়তা এবং চমৎকার প্রাকৃতিক পরিবেশের কারণে বাংলাদেশের পর্যটনের বিকশিত হওয়ার বড় সুযোগ রয়েছে। যেকোনো পর্যটক বাংলাদেশের আতিথেয়তাকে আজীবন মনে রাখবে। সৌদি আরব ভবিষ্যতে বাংলাদেশের পর্যটনের উন্নয়নে সহায়তা করবে।