নারীদের ক্যান্সারজনিত মৃত্যুর বড় কারণ ‘জরায়ুমুখের ক্যান্সার।’ ব্রেষ্ট ক্যান্সারের পর এটিই মৃত্যুর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ হার। প্রতিবছর দেশে সাড়ে ৬ হাজারের বেশি নারী এই ক্যান্সারে মারা যায়। ভবিষ্যতে এই রোগ প্রতিরোধ ও নারীদের সুরক্ষা দিতে কিশোরীদের বিনামূল্যে জরায়ুমুখের ক্যান্সার প্রতিরোধী টিকা দেবে সরকার। ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সী শিশুরা অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহ থেকে বিনামূল্যে এই টিকা পাবে।
দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে স্তন ক্যান্সার শনাক্তের যন্ত্রও দেওয়া হবে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
তিনি বলেন, “আমাদের দেশে অনেকে ব্রেস্ট ক্যান্সারেও আক্রান্ত হচ্ছে। আমাদের দেশে এই রোগ শনাক্তের যন্ত্রের অপ্রতুলতা রয়েছে। এই রোগটা যেন দ্রুত শনাক্ত করা যায়, সেজন্য মেমোগ্রাফির যন্ত্রপাতি অন্তত প্রতি জেলায় দিতে পারি। পরবর্তীতে উপজেলা পর্যায়ে দেওয়া হবে।”
সারাদেশে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা বাড়াতে করণীয় সম্পর্কে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগে এ সভার আয়োজন করা হয়।
উন্নয়নশীল দেশগুলোতে ক্রমান্বয়ে বাড়ছে নারীদের জরায়ুমুখের ক্যান্সার। দেশে বছরে প্রতি একলাখে ১৬ জন নারী এই রোগে আক্রান্ত হন। অপরিচ্ছন্ন থাকা, অসচেতনতা এবং রোগ গোপন করার মানসিকতা এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার বড় কারণ।
আগামী প্রজন্মকে এই রোগ থেকে সুরক্ষা দিতে কিশোরীদের বিনামূল্যে ১ ডোজ হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস- এইচপিভি টিকা দেবে সরকার। ৪ অক্টোবর পঞ্চম থেকে নবম শ্রেণীর ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সী শিশুদের এই টিকা দেয়া হবে।
ব্যয়বহুল এই টিকা সবার জন্য সহজলভ্য নয়। তাই বিনামূল্যে দেয়ার সরকারি সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানান শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
শিক্ষকরা জানান, বিদ্যালয়গামী শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সচেতন করার দায়িত্ব শিক্ষকদেরই নিতে হবে।
তবে, টিকা নিলেই এই জরায়ুমুখের ক্যান্সার থেকে শতভাগ নিরাপদ থাকা যাবে এমনটা নয়। রোগটি প্রতিরোধ করা যাবে। তাই সুস্থ জীবন-যাপনের পরামর্শ দেন এই চিকিৎসক।
প্রাথমিক অবস্থায় টিকাদানের বৈশ্বিক জোট- গ্যাভির কাছ থেকে পাওয়া বেলজিয়ামের তৈরি সাড়ে ২৩ লাখ সারভারিক্স টিকা দেয়া হবে।
স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব ড. মুঃ আনোয়ার হোসেন হাওলাদার, অতিরিক্ত সচিব (জনস্বাস্থ্য অনুবিভাগ) সৈয়দ মজিবুল হক, অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন অনুবিভাগ) মো. সাইদুর রহমান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবীরসহ বিভিন্ন হাসপাতালের পরিচালকরা সভায় অংশ নেন।