খালেদা জিয়ার শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে সরকার প্রধানের বক্তব্যকে অশালীন ও কুরুচিপূর্ণ বলে দাবি করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এর তীব্র নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ব্যক্তিগত, রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলক বক্তব্য রেখেছেন। প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে থেকে এমন বক্তব্য কল্পনাও করা যায় না। এ দেশে প্রধানমন্ত্রীর বাইরে কেউ নেই। তিনি আইনাঙ্গন নিয়ন্ত্রণ করেন তাঁর বক্তব্যে থেকে তা প্রমাণিত হলো।’
গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আজ মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, লন্ডনে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের নিন্দা জানানোর ভাষাও নেই আমাদের। এত অশালীন কুরুচিপূর্ণ, দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্য প্রধানমন্ত্রীর মতো দায়িত্বশীল জায়গা থেকে দিতে পারেন না। তার বক্তব্যে প্রমাণ হয়েছে এদেশের মালিক একজন। এদেশে শেখ হাসিনা ছাড়া আর কেউ নেই। বিচার বিভাগ তিনিই নিয়ন্ত্রণ করেন। আইন-আদালতের তোয়াক্কা করেন না। বেগম জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে যে কথা বলেছেন, তাতে ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক প্রতিহিংসা তার বক্তব্যে চলে এসছে।
‘খালেদা জিয়ার ৮০ বছর বয়স হয়েছে, অসুস্থ তো হবেনই, সময় হয়ে গেছে এতো কান্নাকাটি করে লাভ নেই’ প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, কতটা অমানবিক হলে এ ধরনের কথা বলে। যদিও উনার এত বয়স হয়নি।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, কোনো শর্ত সাপেক্ষে তিনি বিদেশে যাবেন না। পরিবার থেকে বলে দেওয়া হয়েছে। প্রশ্নই উঠতে পারে না। বেগম জিয়াকে হাসপাতালে রেখে কেন, শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রেখেও বিএনপি কোনো নির্বাচন যাবে না। এটা একেবারেই পরিষ্কার কথা।
খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে বিএনপির পরবর্তী সিদ্ধান্তের বিষয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা তো জোর করে তাকে বিদেশে নিয়ে যেতে পারি না। এখনকার চিকিৎসা যেভাবে হচ্ছে সেইভাবেই চালিয়ে যাব। আমরা বিশ্বাস করি জনগণের আন্দোলনে সরকারের পতন হবে। খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসা হবে।
রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে প্রতিহিংসা থেকে বিরত থেকে দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসার অনুমতি দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে চাই। এই জন্যই আমরা গণতন্ত্রের ভাষায় কথা বলি। আশা করি সরকারের শুভবুদ্ধির উদয় হবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু প্রমুখ।