ইংল্যান্ডের পর বিশ্বকাপ ক্রিকেটে এবার নিউজিল্যান্ডের কাছেও হারলো বাংলাদেশ। টপ অর্ডার ব্যাটস্যামনদের দায়িত্বহীন ব্যাটিংয়ের, ছন্দহীন বোলিং এবং ছন্নছাড়া ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ দল ৮ উইকেটে হেরেছে নিউজিল্যান্ডের কাছে। শুক্রবার (১৩ অক্টোবর) চেন্নাইয়ের এম. চিদাম্বরাম স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপের ১৩তম আসরে নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে মাঠে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ২৪৫ রান তুলে বাংলাদেশ। জবাবে ৪২ দশমিক ৫ ওভারে ৮ উইকেট হাতে রেখে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় কিউইরা।

জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরুতে কিছুটা চাপে পড়ে নিউজিল্যান্ডও। টাইট বোলিংয়ে চেপে ধরেন টাইগার বোলাররা। দলীয় ১২ রানের মাথায় ওপেনার রাচিন রবীন্দ্রকে ফেরান মোস্তাফিজ। শুরুর দিকে আশার আলো দেখিয়েছিলেন টাইগার বোলাররা। তবে সেই আশা মিইয়ে দেন ইনজুরি কাটিয়ে দলে ফেরা কেন উইলিয়ামসন আর মারকুটে ড্যারেল মিচেল।

এবারের বিশ্বকাপে নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে এসে দ্বিতীয় হারের মুখ দেখলো বাংলাদেশ। নিউজিল্যান্ড ৮ উইকেট আর ৪৩ বল হাতে রেখে হেসেখেলে হারালো সাকিব আল হাসানের দলকে। এটি কিউইদের টানা তৃতীয় জয়।

উইলিয়ামসন অবশ্য ৭৮ রান করে উঠে যান ড্রেসিংরুমে। তারপরও বাংলাদেশ আর উইকেট ফেলতে পারেনি। ড্যারেল মিচেল ৬৭ বলে ৬ চার আর ৪ ছক্কায় ৮৯ রানে অপরাজিত থেকে বিজয়ীর বেশে মাঠ ছাড়েন।

অথচ নিউজিল্যান্ড ইনিংসের তৃতীয় ওভারেই আঘাত হেনেছিলেন মোস্তাফিজুর রহমান। কাটার মাস্টারের দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে উইকেটরক্ষক মুশফিকুর রহিমকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন রাচিন রাবিন্দ্র (১৩ বলে ৯)। ১২ রানে প্রথম উইকেট হারায় কিউইরা।

কিন্তু দ্বিতীয় উইকেটে ডেভন কনওয়ে আর কেন উইলিয়ামসন মিলে গড়ে ফেলেন ৮০ রানের একটি জুটি। অবশেষে এই জুটিটি ভাঙেন সাকিব আল হাসান।

কনওয়েকে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলেন টাইগার অধিনায়ক। ৪৫ রানে সাজঘরে ফেরেন কিউই ওপেনার। কিন্তু উইলিয়ামসনকে থামাতেই বেগ পেতে হয়েছে বাংলাদেশকে। তিনি উঠে যাওয়ার পর দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন ড্যারেল মিচেল।

এর আগে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ব্যাট করতে নেমে টাইগারদের শুরুটা হয় দুঃস্বপ্নের মতো। কিউই পেসারদের গতি আর বাউন্সে যেন অথৈ সাগরে হাবুডুবু খেয়েছেন বাংলাদেশি ব্যাটাররা। স্কোরবোর্ডে ৫৬ রান তুলতেই টপ অর্ডারের চার ব্যাটারকে হারিয়ে ফেলে বাংলাদেশ। শঙ্কা ছিল আরও একটি ব্যাটিংয়ে বিবর্ণ দিন দেখার।

তবে শুরুর ব্যাটিং ধসের পর দুই অভিজ্ঞ ব্যাটার মুশফিক-সাকিবের গুরুত্বপূর্ণ ৯৬ রানের জুটিতে কিছুটা ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা চালায় টিম টাইগার্স। ৫১ বলে ৪০ রান করে আউট হন সাকিব। সাকিব-মুশফিকের বিদায়ের পর ফের পথ হারায় লাল-সবুজের জার্সিধারীরা। শেষ দিকে মাহমুদউল্লাহর ব্যাটে নির্ধারিত ৫০ ওভারে বাংলাদেশের ইনিংস থেমেছে ২৪৫ রানে।

বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ৬৬ রানের (৭৫ বলে) ইনিংস খেলেন মুশফিকুর রহিম। শেষ দিকে ৪৯ বলে ৪১ রান করে অপরাজিত থাকেন মাহমুদউল্লাহ। যদিও ক্রিজে যতক্ষণ ছিলেন খুব একটা স্বস্তিতে ছিলেন না রিয়াদ। ব্যাটেও কানেক্ট করতে পারছিলেন না ঠিকঠাক। এদিন নিউজিল্যান্ডের হয়ে সর্বোচ্চ তিন উইকেট পেয়েছেন লকি ফার্গুসন। এছাড়া ম্যাট হ্যানরি ও ট্রেন্ট বোল্ট দুটি করে উইকেট দখলে নিয়েছেন।