প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফিলিস্তিনের গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধ-বিরতি ও অঞ্চলটিতে অবৈধ দখলদারিত্ব বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘গাজায় মানবিক সহায়তা নিশ্চিত ও অবিলম্বে যুদ্ধ-বিরতির জন্য আমি সকল পক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। আমি এই ভয়াবহ যুদ্ধ, নির্বিচার হত্যাযজ্ঞ ও অবৈধ দখলদারিত্ব বন্ধে ভূমিকা রাখার জন্য বিশ্ব নেতাদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’

সোমবার (৬ নভেম্বর) সৌদি আরবের জেদ্দায় ‘ইসলামে নারীর মর্যাদা ও ক্ষমতায়ন’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্যে এই আহ্বান জানান।

গাজায় ইসরায়েলের অব্যাহত বর্বরোচিত হামলার প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘গাজায় নিরীহ নারী ও শিশুদের ওপর ইসরায়েলি নৃশংসতার নিন্দা জানাই। এটা ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে দুই লক্ষাধিক নারীর ওপর চালানো বর্বরতার স্মৃতি ফিরিয়ে এনেছে। এই নৃশংসতা ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট আমার বাবা-মা ও পরিবারের সদস্যদের নিষ্ঠুর হত্যাকাণ্ডকেই মনে করিয়ে দেয়। এটা যেন ২০১৭ সালের আগস্টে মিয়ানমার থেকে নির্যাতিত-নিপীড়িত লাখ লাখ রোহিঙ্গার বাংলাদেশ অভিমুখে ছুটে আসার দৃশ্যপটকে ফিরিয়ে আনলো। আমি অবিলম্বে গাজায় যুদ্ধবিরতি এবং সেখানে মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর সুযোগ নিশ্চিত করতে সব পক্ষের প্রতি আহ্বান জানাই। ’

PP1

শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই ভয়াবহ যুদ্ধ, গোষ্ঠীগত শাস্তি ও অবৈধ দখলদারিত্ব এখনই থামাতে আমি বিশ্বনেতাদের প্রতি আহ্বান জানাই। একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য আমাদের অবশ্যই ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। আমি আমার ফিলিস্তিনি ভাইবোনদের পক্ষে নিজের ভূমিকা রেখে যাবো। শান্তির জন্য সব মুসলিম নারীকে সোচ্চার হতে হবে। ’

মুসলিম নারীদের কল্যাণের জন্য এসময় কিছু সুপারিশ ও প্রস্তাবনা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।

PP2

তিনি বলেন, প্রথমত—ফিলিস্তিনে সংঘাতে অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের, বিশেষ করে নারী ও শিশুদের প্রতি অপরাধের বিচার করতে হবে। দ্বিতীয়ত—সব ধরনের অপরাধ, সহিংসতা ও বৈষম্য এবং নারী ও মেয়েদের টার্গেট করে ক্রমবর্ধমান ইসলামবিদ্বেষকে ‘না’ বলতে হবে।

তৃতীয়ত—এসডিজি-৫ অর্জনে লিঙ্গ সমতা এবং নারী ও মেয়ের ক্ষমতায়নে বাড়তি মনোযোগ দিতে হবে। চতুর্থত—মুসলিম নারী ও মেয়েরা যেন জনপরিসরে নিজেদের পছন্দ বা ইচ্ছে অনুসারে চলতে পারে, সেটা নিশ্চিত করতে হবে।

পঞ্চম প্রস্তাবনায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, নারীর ক্ষমতায়ন ও মূলধারায় তাদের ভূমিকা রাখার ক্ষেত্র তৈরিতে উজ্জ্বল উদাহরণ বাংলাদেশ এ বিষয়ে বন্ধুপ্রতীম মুসলিম দেশগুলোর সঙ্গে অভিজ্ঞতা বিনিময়ে প্রস্তুত।