প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আজকের বাংলাদেশ বদলে যাওয়া বাংলাদেশ।  উন্নয়নের এই অগ্রযাত্রা ধরে রেখে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। আজ শুক্রবার (১০ই নভেম্বর) সকালে রাজধানীর বিজয় সরণীতে ‘মৃত্যুঞ্জয়ী প্রাঙ্গণ’ এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগের বাংলাদেশ আর এখনকার বাংলাদেশের মধ্যে অনেক পার্থক্য রয়েছে। ক্ষুধা-দারিদ্র, অশিক্ষা, চিকিৎসাহীনতা, ভূমিহীন-গৃহহীন মানুষের ক্রন্দনে বাংলার আকাশ-বাতাস ভারী ছিল। এই বাঙালি জাতিকে আর্থসামাজিক মুক্তি দেওয়ার জন্যই জাতির পিতার সংগ্রাম। এ দেশের মানুষের জন্য তিনি নিজের জীবনকে উৎসর্গ করেছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, দুর্ভাগ্যের বিষয় ইদানীং আবার সেই অগ্নিসন্ত্রাস আর অবরোধের নামে আন্দোলন শুরু হয়েছে। আমি জানি না এতে কার কতটুকু লাভ হচ্ছে। কিন্তু কিছু মানুষ তো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। বিশেষ করে সাধারণ মানুষের ক্ষতি হচ্ছে বেশি।

তিনি বলেন, একজন মানুষ হয়ত কষ্ট করে সারাজীবনে একটা বাস কেনেন, আর অবরোধে সেটা পোড়ানো হচ্ছে। বাসের ভেতর হেলপার ঘুমিয়ে আছে, সেই ঘুমন্ত মানুষকে পুড়িয়ে মারা হচ্ছে। এ ধরনের ঘটনা কেন ঘটাচ্ছে আমি জানি না।

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পর থেকে সেই ২০০৮ এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ এককভাবে ২৩৩ সিট পেয়েছিল। বিএনপি পেয়েছিল মাত্র ৩০ সিট। আর বাকি অন্যরা। আমরা সরকারে এসেছি, এরপর ২০১৪, ২০১৮ এর নির্বাচন তখনও অগ্নিসন্ত্রাস এবং নানা ঘটনা ঘটে। সেগুলো অতিক্রম করে আমরা প্রায় ১৫ বছর ধরে আমরা সরকারে।

গত ১৫ বছরে বাংলাদেশের উন্নয়ন-অগ্রগতির কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকের বাংলাদেশ বদলে যাওয়া বাংলাদেশ।

বর্তমান বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে দেশের অর্থনীতি ঠিক রাখতে ব্যাংকসহ আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সহযোগিতা চেয়ে শেখ হাসিনা বলেন, দেশের অর্থনীতিটা যেন সঠিকভাবে চলে সেভাবে আপনারা একটু সহযোগিতা করবেন।

তিনি বলেন, বৈশ্বিক পরিস্থিতির কারণে এখন যেমন একটা অর্থনৈতিক মন্দার প্রভাব পড়ছে, সেখানে আপনাদেরও একটু নজর দিতে হবে। আপনারা সহযোগিতা করবেন যেন আমাদের অর্থনীতি কোনো মতেই ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, নিজেদের দেশে টাকা পয়সা থাকলে সেটা দেশের জন্যও লাভ, আর নিজেদেরও একটা নিশ্চয়তা থাকে। সেই জিনিসটা সবাইকে মাথায় রাখতে হবে। নিজের দেশটার দিকে আগে তাকাতে হবে। অনুরোধ করবো সেই বিষয়টার দিকে বিশেষ দৃষ্টি দেবেন।

দারিদ্র বিমোচনে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, দারিদ্রের হার ৪১ ভাগ থেকে ১৮ দশমিক ৭ ভাগে নামিয়ে এনেছি। হতদরিদ্র ২৫ দশমিক ১ ভাগ ছিল সেটা আমরা ৫ দশমিক ৬ ভাগে নামিয়ে এনেছি। আগামীতে সেইটুকুও থাকবে না। দেশে হতদরিদ্র থাকবে না। একেবারে হতদরিদ্রদের বিনা পয়সায় খাবার, ওষুধ, চিকিৎসার ব্যবস্থা আমরা করে দিচ্ছি। পাশাপাশি ঘরবাড়ি তৈরি করে দিচ্ছি।

দেশের শীতার্ত মানুষের জন্য অনুদান দেওয়ায় ব্যাংকসহ আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে জনগণের পক্ষ থেকে আন্তরিক ধন্যবাদ দেন সরকার প্রধান।