ঠাৎ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিষিদ্ধ হয়েছে শ্রীলঙ্কা। দেশটির ক্রিকেট বোর্ডে সরকারের হস্তক্ষেপের কারণে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল-আইসিসি তাদের সদস্যপদ বাতিল করেছে।

বিশ্বকাপ ক্রিকেটে বাজে পারফরম্যান্সের কারণে সম্প্রতি শ্রীলঙ্কার ক্রীড়া মন্ত্রণালয় তাদের ক্রিকেট বোর্ড ভেঙ্গে নতুন অ্যাডহক কমিটি করে দিয়েছিলো। অর্জুনা রানাতুঙ্গার নেতৃত্বে সেই অ্যাডহক কমিটিকে অনুমোদন দেয়নি আইসিসি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল-আইসিসির নিয়ম অনুযায়ী কোন দেশের বোর্ডে সরকার হস্তক্ষেপ করতে পারবে না। কিন্তু শ্রীলঙ্কা সেই নির্দেশনা না মানায় আইসিসি তাদের সদস্যপদ সাময়িকভাবে বাতিল করলো। এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আইসিসি এই নির্দেশনার কথা জানায়।

এক বিবৃতিতে আইসিসি বলছে, ‘আইসিসি বোর্ড সভায় আজ সিদ্ধান্ত নিয়েছে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট সদস্য হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ বিধি-নিষেধ লঙ্ঘন করেছে। বিশেষ করে, স্বাধীনভাবে কাজ করতে ক্রিকেট প্রশাসনকে সরকারি হস্তক্ষেপের বাইরে থাকার প্রয়োজন ছিল। সময়মতো এই স্থগিতাদেশের শর্তগুলো জানিয়ে দেবে আইসিসি বোর্ড।’

ভারতের আহমেদাবাদে ১৮ থেকে ২১ নভেম্বর আইসিসির ত্রৈমাসিক সভা হওয়ার কথা থাকলেও, এসএলসির পরিস্থিতি নিয়ে আইসিসি বোর্ড শুক্রবার অনলাইনে বিশেষ সভা করে। ক্রিকেট ওয়েবসাইট ইএসপিএনক্রিকইনফোর প্রতিবেদনে বলা হয়, এসএলসির পরিচালনা থেকে আর্থিক-সমস্ত ক্ষেত্রে, এমনকি জাতীয় দল সংক্রান্ত বিষয়গুলোতে শ্রীলঙ্কা সরকারের হস্তক্ষেপ নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিল আইসিসি বোর্ড।

আইসিসি তাদের সিদ্ধান্তের বিষয়ে এসএলসিকে জানিয়েছে এবং এটাও জানিয়ে দিয়েছে যে, ২১ নভেম্বর আইসিসি বোর্ডের সভায় পরবর্তী পদক্ষেপগুলো নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

বিশ্বকাপের চলতি আসরে প্রত্যাশিত পারফরম্যান্স করতে পারেনি না শ্রীলংকা। ৯ ম্যাচে মাত্র দুই জয়ে ৪ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের নয় নম্বর পজিশনে রয়েছে দলটি।

গত ২ নভেম্বর ভারতের বিপক্ষে ৩৫৮ রানের বিশাল টার্গেট তাড়ায় মাত্র ৫৫ রানে অলআউট হয়ে ৩০২ রানের বিশাল ব্যবধানে হেরে যায় ১৯৯৬ সালের বিশ্বকাপজয়ী  শ্রীলংকা।

বিশ্বকাপে এমন বাজে পারফরম্যান্সের কারণে ক্রিকেট বোর্ডের নির্বাহী কমিটির পদত্যাগ দাবি করেছিলেন দেশটির ক্রীড়ামন্ত্রী রোশান ফার্নান্দো। এক বিবৃতিতে ক্রীড়ামন্ত্রী জানান, ‘শ্রীলংকার ক্রিকেট অফিসিয়ালদের পদে থাকার কোনো নৈতিক অধিকার নেই। তাদের স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করা উচিত।’

শ্রীলংকার ক্রীড়া আইন অনুযায়ী অন্য খেলার মতো ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অধীনেই থাকবে এসএলসি। কিন্তু আইসিসির নিয়ম অনুযায়ী বোর্ডে সরকারি কোনো হস্তক্ষেপ থাকতে পারবে না। যে কারণে চাইলেও খুব একটা প্রভাব দেখাতে পারে না মন্ত্রণালয়। ২০১৪ সালে নির্বাচিত বোর্ড ভেঙে অন্তর্বর্তীকালীন এক কমিটি গড়েছিল শ্রীলংকা সরকার। তখন আইসিসি শ্রীলংকার প্রাপ্য অর্থ প্রদান স্থগিত করেছিল।