ঘূর্ণিঝড় ‘মিধিলি’র আঘাতে উপকূলের বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। শুক্রবার যেসব স্থানের ওপর দিয়ে ঝড় বয়ে গেছে তার মধ্যে বেশ কিছু এলাকায় বড় বড় গাছ ভেঙে ও উপড়ে পড়ে যান চলাচল ব্যাহত হয়েছে। উপকূলীয় বিভিন্ন জেলায় হাজারের বেশি কাঁচা ঘরবাড়ির ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পাশাপাশি টানা বৃষ্টির কারণে উঠতি আমন ফসলও ক্ষতির মুখে পড়েছে বলে জানিয়েছে কৃষি অধিদপ্তর।

প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে উপকূলীয় অনেক জায়গা দুপুরের পর থেকে বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন ছিল। ফলে বিকালে দেশের মোট চাহিদা অন্য দিনের তুলনায় অর্ধেকে নেমে আসে। উপকূলের চরাঞ্চলসহ নিম্নাঞ্চলে জলাবদ্ধতা তৈরি হওয়ায় মানুষকে দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে। টানা বৃষ্টির মধ্যে সরকারি ছুটির দিনে রাস্তায় যানবাহন ও মানুষজনের আনাগোনা ছিল একেবারেই কম।

ঘূর্ণিঝড় ‘মিধিলি’ চলে গেলেও উপকূলের বিভিন্ন স্থানে এর ক্ষত চিহ্ন রেখে গেছে। এর প্রভাবে উপকূলের বিভিন্ন জেলায় বাড়িঘর, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বিধ্বস্ত হয়েছে। উপড়ে পড়েছে অসংখ্য গাছপালা। বিনষ্ট হয়েছে ক্ষেতের আমন ফসল ও শাকসবজি।

ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব টানা বৃষ্টিতে বরিশাল নগরীর বগুড়া রোড ,গোরস্তান রোড,বটতলা, সার্কুলার রোডসহ বেশ কয়েকটি এলাকা  এখনো পানিতে ডুবে আছে। এর মধ্যে কোন কোন এলাকায় হাটু সমান পানি জমে আছে।  নগরীর বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুৎ না থাকায় নানা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

পটুয়াখালিতে রোপা আমন, খেসারী, শাক-সবজিন ক্ষেতসহ বীজতলা নষ্ট হয়ে গেছে। উপড়ে পড়েছে অসংখ্য গাছপালা। বিধ্বস্ত হয়েছে কাঁচা বাড়িঘর, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। জেলা কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, কৃষিখাতে জেলায় প্রায় ৬০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। মাঠের পানি দ্রুত সরাতে কৃষি বিভাগ কাজ করছে বলেও জানান পটুয়াখালী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোহাম্মাদ নজরুল ইসলাম।

ঘুর্ণিঝড়ে নোয়াখালী জেলায় ১ হাজার ১২৫ টি ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসক। এরমধ্যে আংশিক বিধ্বস্ত হয়েছে ৯১৩ টি বাড়ি এবং সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত বাড়ির সংখ্যা ২১২ টি। এসব বাড়ির বাসিন্দাদের পুনর্বাসনের জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।

শরীয়তপুরে শাক-সবজিসহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষেত পানিতে তলিয়ে আছে। এতে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন কৃষকেরা।

এদিকে ভোলায় ‘মিধিলি’র তাণ্ডবে দুই শতাধিক কাঁচাঘর-বাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। জেলা প্রশাসক জানিয়েছেন, ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা  করে তাদের সহায়তা দেয়া হবে।