আসছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে যারা পর্যবেক্ষক হিসেবে বাংলাদেশে আসবেন, তাদের যাতে কোন হয়রানি না হয় সে বিষয়ে বৈঠকে করেছে নির্বাচন কমিশন। আজ মঙ্গলবার (২৮ শে নভেম্বর) সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশনে আয়োজিত এই বৈঠকে, স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম বলেন, নির্বাচনের আগে এ ধরনের সভা ‘গতানুগতিক’। স্বরাষ্ট্র, পররাষ্ট্র ও তথ্য মন্ত্রণালয়সহ বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ এবং সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে বৈঠকে বসেছিল কমিশন।

“প্রতিটি সংসদ নির্বাচনের আগেই এ ধরনেরর সভা হয়। করণীয় কী, আবাসন, বিদেশি পর্যবেক্ষকদের নিরাপত্তা এসব নিয়ে সভা হয়। তার আলোকে এ সভাটি হয়েছে।

“বিদেশি পর্যবেক্ষকদের নিরাপত্তা শুধু নয়, যারা নিজ খরচে আসবেন, তারা কোন হোটেলে থাকবেন, কোন এলাকায় পর্যবেক্ষণে যাবেন এবং আমন্ত্রিত অতিথিদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা, সব মিলিয়ে কমপ্লিট সিদ্ধান্ত নিতে এ সভা হয়েছে।”

আগামী ৭ জানুয়ারির নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য প্রতিবেশী ভারত, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, সার্ক ও ওয়াইসিসহ বিশ্বের ৩৮ দেশ ও সংস্থাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। গত ১৫ নভেম্বর নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পর আমন্ত্রিতদের আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি পাঠিয়েছে ইসি।

এর বাইরে বিভিন্ন দেশ ও সংস্থার ৮৭ জন পর্যবেক্ষক ভোট পর্যবেক্ষণের জন্য ইসির কাছে আবেদন জানিয়েছে।

এবার কতজন বিদেশি সাংবাদিক, পর্যবেক্ষক ও আমন্ত্রিত অতিথি ভোট দেখতে আসছেন, তা চূড়ান্ত হবে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে।

ইসি সচিব বলেন, “বিদেশি ব্যক্তিবর্গ, সাংবাদিক ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, যারা দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করতে আসবেন, তাদের থাকাসহ অন্যান্য সেবার ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত যে সমস্ত দপ্তর, মন্ত্রণালয় সম্পৃক্ত তাদের সঙ্গে এ সভা হয়।

“সভার মূল উদ্দেশ্য ছিল নির্বাচন কমিশনের যে বৈদেশিক পর্যবেক্ষক নীতিমালা আছে, তা অনুসরণ করে যারা নিজ খরচে পর্যবেক্ষণ করতে চান, তাদের আগমন এবং ইসি থেকে যাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে, সেই আমন্ত্রিত মেহমানদের কীভাবে একটি নিরবচ্ছিন্ন সেবা দেওয়া যায়, তা ঠিক করা।“

ইসির প্রস্তুতির বিষয়ে সচিব বলেন, “বিদেশি মেহমানদের জন্য বিমানবন্দরে আমরা একটা হেল্প ডেস্ক করি, যেন সহজেই ইমিগ্রেশন সেরে তারা নির্ধারিত হোটেলে যেতে পারেন। সেখানেও একটা হেল্প ডেস্ক করে থাকি, সেখান থেকে তারা যেন নির্বাচন সংক্রান্ত তথ্য নিতে পারেন। তারা কোন হোটেল থাকবেন সেটা সভায় চূড়ান্ত হয়েছে। তাদের নিরাপত্তার বিষয়টি চূড়ান্ত হয়েছে। হঠাৎ অসুস্থ হলে স্বাস্থ্যসেবার বিষয়টি আলোচনা হয়েছে।”

এক প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব জাহাংগীর জানান, যেসব বিদেশি পর্যবেক্ষক নিজেদের খরচে আসবেন, তারা ৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত আবেদন করতে পারবেন। আর ইসির আমন্ত্রিতরা ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন।

সেক্ষেত্রে নিজ খরচে বিদেশি পর্যবেক্ষকদের সংখ্যা ৭ ডিসেম্বরের পর এবং আমন্ত্রিত অতিথি কতজন শেষ পর্যন্ত আসছেন তা ১৬ ডিসেম্বরের পর জানা যাবে।

পর্যবেক্ষকদের নিরাপত্তার ধরন নিয়ে জাহাংগীর আলম বলেন, “কতজন আসবেন, কোন ক্যাটাগরির আসবেন, সে অনুযায়ী নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যেমন প্রধান নির্বাচন কমিশনার হলে এক রকম, আর সচিব হলে আরেক রকম হবে, নির্বাচন কমিশনার হলে এরকম হবে নিরাপত্তা। কাজেই কারা আসবেন তা না জানা পর্যন্ত এ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলতে পারব না। তবে তাদের নিরাপত্তসহ সব ব্যবস্থা সুন্দরভাবে করা হবে।”