টানা চতুর্থবার সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে সরকার গঠনের পর কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে আজ প্রথম বৈঠক করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ সোমাবার (২২ শে জানুয়ারি) সন্ধ্যা ৬টায় প্রধানমন্ত্রীর বাস ভবন গণভবনে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। জাতীয় নির্বাচন ঘীরে দলের অন্তকোন্দল নিরসন ও দেশ বিদেশী ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে দলকে আরও শক্তিশালী করাসহ দলীয় প্রধান নানা দিক নির্দেশনা দেবেন বলে মনে করছেন নেতারা।
এ ছাড়া দলীয় বিভাজন ও কোন্দল মেটাতে জেলা সফর, জেলা-উপজেলায় বর্ধিত সভা নিয়েও সিদ্ধান্ত নেবে আওয়ামী লীগ। আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন সামনে রেখে দলের কৌশল চূড়ান্ত হতে পারে আজকের সভায়।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম কালবেলাকে বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরে এটা প্রথম সভা। ফলে এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সভায় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের যে বিশাল বিজয়, সেটা নিয়ে আলোচনা হবে। এ ছাড়া নির্বাচনের আগের ও পরের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা-পর্যালোচনা হবে। দলকে আরও ঐক্যবদ্ধ করে সামনের দিকে এগিয়ে নেওয়ার বিষয়ে আলোচনা হবে। তিনি আরও বলেন, জেলা-উপজেলা ও কেন্দ্রীয় পর্যায়ে বর্ধিত সভা করা নিয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত হবে। জেলা সফর নিয়ে আলোচনা করে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সামনে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। সেখানে কীভাবে নির্বাচন হবে, তার কৌশলগত বিষয় নিয়েও আলোচনা হবে। যারা নির্বাচন করে না, তারা না এলে প্রতীক ছাড়াও নির্বাচন করা যেতে পারে কি না, তা নিয়ে কথাবার্তা হবে।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, আজকের সভায় সুনির্দিষ্ট কোনো এজেন্ডা নেই। সভার শুরুতে বিশাল বিজয়ের মধ্য দিয়ে দলকে টানা চতুর্থ মেয়াদে ক্ষমতায় আনায় এবং সরকার গঠন করায় দলীয় সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কার্যনির্বাহী কমিটির পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হবে।
বিএনপি ও তাদের মিত্ররা ভোট বর্জন করায় প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচনের স্বার্থে এবার দলীয় প্রার্থীদের পাশাপাশি স্বতন্ত্র প্রার্থীদেরও মাঠে রেখেছিল আওয়ামী লীগ। এতে দলীয় ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের পক্ষে-বিপক্ষে অনেক জায়গায় বিভক্ত হয়ে পড়ে আওয়ামী লীগের তৃণমূল। শুরু হয় নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্ব-সংঘাত, যা ভোটের পরেও অব্যাহত রয়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে এখনো ঘটছে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব-সংঘর্ষের ঘটনা। নির্বাচনের পরে এখন বিষয়গুলো নিরসন করতে চায় আওয়ামী লীগ। আজকের সভায় এ বিষয়টি সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পাবে বলে জানা গেছে।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন কালবেলাকে বলেন, আশা করছি, নির্বাচন-পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা সার্বিক বিষয়ে প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনা দেবেন।
সারা দেশে ৪৯৫টি উপজেলা পরিষদ রয়েছে। এর মধ্যে বর্তমানে প্রায় সাড়ে ৪শ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন করার উপযুক্ত। এবারও কয়েকধাপে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আগামী মার্চে প্রথম ধাপের নির্বাচন শুরু হতে পারে বলে নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে। এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রস্তুতি ও কৌশল কি হবে, সে বিষয়ে আজকের সভায় বিস্তারিত আলোচনা হবে বলে জানা গেছে।
জানা যায়, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনও বর্জন করতে পারে বিএনপি, তবে প্রতীক বরাদ্দ না হলে বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিতে পারে। ফলে উভয় বিষয়টি মাথায় রেখেই নিজেদের প্রস্তুতি চূড়ান্ত করবে আওয়ামী লীগ। দলীয় প্রার্থী না দিয়ে নির্বাচন সবার জন্য উন্মুক্ত রাখা হবে নাকি জাতীয় নির্বাচনের মতো দলীয় প্রার্থী দিলেও স্বতন্ত্রদের বিষয়ে নমনীয় থাকবে, তা নিয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত হবে আজকের সভায়।