ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্করের সঙ্গে অত্যন্ত আন্তরিক পরিবেশে খোলামেলা ও বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন দিল্লি সফররত পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। বুধবার সন্ধ্যায় দিল্লির হায়দ্রাবাদ হাউজে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে প্রথমে একান্ত ও পরে আনুষ্ঠানিক দ্বিপাক্ষিক বৈঠক শেষে তিনি এ কথা বলেন।
দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মধ্যে বৈঠকে বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক ইস্যুতে বিশদে আলোচনা হয়েছে। আর অজিত ডোভালের সঙ্গে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আলোচনায় প্রাধান্য পেয়েছে মিয়ানমারের সীমান্ত পরিস্থিতি।
মি জয়শঙ্কর ও মি মাহমুদের বৈঠকের পর ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, “আন্ত:সীমান্ত কানেক্টিভিটি, অর্থনৈতিক ও উন্নয়ন খাতে অংশীদারি, প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা, বিদ্যুত্, জ্বালানি, জলসম্পদ খাতে সহযোগিতা এবং দু’দেশের মানুষে-মানুষে আদানপ্রদান-সহ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বিভিন্ন দিক তারা পর্যালোচনা করেছেন।”
আর মি জয়শঙ্কর নিজে তার এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে মন্তব্য করেছেন, “পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, আপনাকে ভারতে স্বাগত।”
“আমাদের আজকের আলোচনা ভারত বাংলাদেশ মৈত্রীকে শক্তিশালী করবে”, বলেও তিনি ওই পোস্টে মন্তব্য করেন।
এর আগে অজিত ডোভালের সঙ্গে মি মাহমুদের বৈঠকে মিয়ানমারের সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে তাদের মধ্যে বিশদ আলোচনা হয়েছে বলেও জানা যাচ্ছে।
ওই বৈঠকের শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেন, “আঞ্চলিক নিরাপত্তার স্বার্থে মিয়ানমার সীমান্ত পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে ভারত-বাংলাদেশ একযোগে কাজ করবে।”
“এ বিষয়ে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। পরে বিস্তারিত কর্মপদ্ধতি ঠিক করা হবে”, আরও জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, ভারত ও বাংলাদেশ উভয়েরই প্রতিবেশী দেশ হল মিয়ানমার।
তবে গত বেশ কিছুদিন ধরে মিয়ানমারের চিন ও রাখাইন প্রদেশে সে দেশের সেনাবাহিনী ও বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে যে তীব্র সংঘাত চলছে, তার পরিণাম ভুগতে হচ্ছে ভারত ও বাংলাদেশ, দুই দেশকেই।সাম্প্রতিক সময়ে দুই দেশের সংকটের চরিত্রও অনেকটা একই ধরনের।
গত এক সপ্তাহের মধ্যে ভারত ও বাংলাদেশ – দুই দেশেই মিয়ানমারের সেনা ও সীমান্তরক্ষী বাহিনীর শত শত সদস্য পালিয়ে এসে আশ্রয় নিয়েছে।
ভারতের মিয়ানমার-লাগোয়া মিজোরাম সীমান্তে ও বাংলাদেশের মিয়ানমার সংলগ্ন টেকনাফ অঞ্চলেও এই সংঘাতের আঁচ এসে পড়ছে। মিয়ানমার থেকে ছোঁড়া মর্টার শেলের আঘাতে বাংলাদেশের ভেতরে একাধিক প্রাণহানিও হয়েছে।
এই পটভূমিতে দিল্লিতে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ও বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মধ্যে এদিনের বৈঠককে খুব গুরুত্বপূর্ণ বলেই ধারণা করা হচ্ছে।