ময়মনসিংহ সদর উপজেলায় বাস ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে সাতজন নিহত হয়েছেন। আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার আলালপুর এলাকায় ময়মনসিংহ-শেরপুর সড়কে এই দুর্ঘটনা ঘটে।

ময়মনসিংহ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) আনোয়ার হোসেন তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

মৃতরা হলেন গফরগাঁও উপজেলার কৃষ্ণবাজার এলাকার আব্দুল হামিদের ৬০ বছরে স্ত্রী মরতুজা বেগম ও তিন বছরের নাতনি জান্নাত আক্তার। মরতুজা ভালুকায় একটি গার্মেন্টসে চাকরি করতেন। একই উপজেলার ঘাগড়া গ্রামের হুমায়ুন কবিরের ২৭ বছরের প্রবাসী ছেলে জোবায়ের ঢালীর মৃত্যু হয়েছে।

মুক্তাগাছা উপজেলার ঝালুকা গ্রামের সুরুজ মিয়ার ৫০ বছরের স্ত্রী রিনা আক্তার ও বাহাঙ্গা গ্রামের আজহার আলীর ২৫ বছরের ছেলে শরিফুল ইসলাম।

ত্রিশালে সড়ক দুর্ঘটনায় সিন্নাতুর নামে সাত মাস বয়সী এক শিশুর মৃত্যু হলেও আরেকজনের পরিচয় শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ।

ভালুকা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল হোসেন বলেন, ‘সকালে ঢাকা থেকে সেনাবাহিনীর একটি গাড়ি ময়মনসিংহের উদ্দেশে ছেড়ে আসে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ভালুকার মেহেরাবাড়ী এলাকায় গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারায়। পথচারী মরতুজা বেগম ও তার নাতনি জান্নাত আক্তারকে চাপা দিয়ে সেটি সড়কের পাশে উল্টে যায়। এতে দাদি ও নাতনি ঘটনাস্থলেই নিহত হন।

‘এ ঘটনায় সেনাবাহিনীর আট সদস্য গুরুতর আহত হলে তাদের ঢাকার সিএমএইচ হাসপাতালে পাঠানো হয়। আমরা খবর পেয়ে মরদেহ দুটি উদ্ধার করি। পরে নিহতদের পরিবার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই মরদেহ হস্তান্তর করা হয়।’

মুক্তাগাছা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) চাঁদ মিয়া বলেন, ‘সকালে জামালপুর থেকে যাত্রী নিয়ে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা ময়মনসিংহের দিকে আসছিল। বেলা ১১টার দিকে মুক্তাগাছার ঘাটুরী এলাকায় একটি ট্রাক ওই গাড়িটিকে চাপা দেয়।

এতে অটোরিকশার চালকসহ তিন যাত্রী গুরুতর আহত হন। আশপাশের লোকজন তাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে রিনা আক্তারকে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

আহত তিনজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠালে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় যুবক শরিফুল ইসলামের মৃত্যু হয়।

ত্রিশাল উপজেলার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাইন উদ্দিন বলেন, ‘ময়মনসিংহ থেকে ছেড়ে আসা একটি বাস ঢাকায় যাচ্ছিল। বেলা দেড়টার দিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের বৈলর কাজির শিমলা এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশে থাকা বালুবোঝাই ট্রাকের পেছনে ধাক্কা দেয়।

‘এতে বাসের সামনের অংশ দুমড়ে-মুচড়ে গিয়ে ১৩ জন আহত হন। গুরুতর আহত অবস্থায় ১০ জনকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।’

ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ইনচার্জ জুলহাস উদ্দিন বলেন, ‘দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত দুজনকে হাসপাতালে ভর্তির আগেই মারা যান৷ তাদের মধ্যে একজন পুরুষ ও একটি শিশু ছিল। পরিবারের লোকজন দ্রুত মরদেহ নিয়ে যাওয়ায় পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি।

‘বর্তমানে হাসপাতালে আটজন চিকিৎসাধীন। তাদের মধ্যে দুজন নারী ও ছয়জন পুরুষ।’

তিনি বলেন, ‘গফরগাঁওয়ে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত অবস্থায় জুবায়ের ঢালী নামে এক যুবককে আনা হলেও তিনিও মারা যান।’