প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যারা জাতীয় নির্বাচন বানচাল করতে চেয়েছিলো, তারাই চক্রান্ত করে বাড়িয়ে দিয়েছিলো জিনিসপত্রের দাম। এমন চক্রান্ত্রকারীদের গণধোলাই দেয়া উচিত বলেও মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।

আজ শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সরকারি বাসভবন গণভবনে তিনি তাঁর সাম্প্রতিক জার্মানি সফর এবং মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে অংশগ্রহণ  নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, নির্বাচন যাতে না হয় সেজন্য বিরাট চক্রান্ত ছিলো। যখন চক্রান্তকারিরা দেখলো নির্বাচন আটকানো যাবে না তখন চক্রান্ত হলো জিনিসপত্রের দাম বাড়িয়ে দেশে অস্থিতিশীলতা তৈরি করে সরকার উৎখাতের চেষ্টা হয়েছিলো।

মিউনিখ সম্মেলনে যুদ্ধ এবং নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, যুদ্ধ এবং স্যাংশন ও পাল্টা স্যাংশন বিশ্বের কোনো কল্যাণ বয়ে আনতে পারে না। এগুলো বন্ধ করার জন্য আমি বিশ্বনেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছি।

শেখ হাসিনা বলেন, আমি জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট সমস্যা মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় অর্থায়নের বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনার জন্য বিশ্বের ধনী দেশগুলোকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানাই।

তিনি আরও বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত বহুবিধ নিরাপত্তা ঝুঁকি মোকাবিলায় ক্ষতিগ্রস্থ দেশ ও জনগোষ্ঠীর জন্য অর্থায়নের পরিমাণ বৃদ্ধি, প্রতিশ্রুত অর্থের বাস্তবিক হস্তান্তর, ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোতে আর্থিক ও প্রযুক্তিগত সহায়তা নিশ্চিত করার ওপর আমি বিশেষভাবে জোর দেই।

সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ সেলিম ও বেগম মতিয়া চৌধুরী, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী উপস্থিত আছেন।

টানা তৃতীয় মেয়াদে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বভার গ্রহণের পর শেখ হাসিনার এটিই প্রথম সংবাদ সম্মেলন।

জার্মানিতে তিন দিনের সরকারি সফর শেষে সোমবার সকালে দেশে ফেরেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে অংশ নিতে দেশটিতে গিয়েছিলেন তিনি। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়লাভ করে টানা চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণের পর এটাই ছিল শেখ হাসিনার প্রথম সরকারি বিদেশ সফর। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি তিনি মিউনিখে পৌঁছান।

জার্মানিতে অবস্থানকালে প্রধানমন্ত্রী মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেন। পাশাপাশি বৈঠক করেন বেশ কয়েকজন বিশ্বনেতার সঙ্গে।

জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজ, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি, নেদারল্যান্ডসের প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুট, আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ, কাতারের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান আলথানি ও ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী মিতে ফ্রেডিরিকসেনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এছাড়া, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর, যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র, কমনওয়েলথ ও উন্নয়নবিষয়ক মন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন এবং জার্মানির ফেডারেল অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়নবিষয়ক মন্ত্রী সভেনজা শুলজের সঙ্গেও বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।