বিপিএলের দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে রংপুর রাইডার্সকে ৬ উইকেটে হারিয়েছে ফরচুন বরিশাল। রংপুরের দেয়া ১৫০ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ৯ বল হাতে রেখেই পেরিয়ে গেছে বরিশাল।

চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা তেমন ভালো করতে পারেনি ফরচুন বরিশাল। তবে ম্যাচ কখনো নাগালের বাইরে যেতে দেয়নি দলটি। দায়িত্বশীল ইনিংস খেলেছেন অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম। তাকে ভালো সঙ্গ দিয়েছেন সৌম্য সরকার এবং কাইল মেয়ার্স। এই ৩ জনের ব্যাটে সহজেই লক্ষ্য পেরিয়ে গেছে তামিম ইকবালের দল।

বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) হাইভোল্টেজ ম্যাচে টস জিতে রংপুরকে ব্যাটিংয়ে আমন্ত্রণ জানায় বরিশাল। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে বরিশালকে ১৫০ রানের সহজ লক্ষ্য দেয় রংপুর। ৯ বল এবং ছয় উইকেট হাতে থাকতেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় বরিশাল। সেই সঙ্গে দ্বিতীয়বারের মতো ফাইনালের টিকিট পেল বরিশাল।

সহজ লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতে দেখে শুনে খেলতে থাকেন বরিশালের দুই ওপেনার তামিম ইকবাল এবং মেহেদী হাসান মিরাজ। তবে ইনিংস বড় করতে পারেননি দুজনের কেউই। ৮ বলে ১০ রান করে তামিম আউট হলে, ১৪ বলে ৮ রান করে তাকে সঙ্গ দেন মিরাজ।

সৌম্যকে সঙ্গে নিয়ে দলকে ফাইনালের পথে এগিয়ে নিতে থাকে মুশফিক। ১৮ বলে ২২ রান করে আউট হন সৌম্য। এরপর ব্যাটিংয়ে এসে দ্রুত রান তুলতে থাকেন কাইল মায়ার্স। ১৫ বলে ২৮ রান করে এই ক্যারিবিয়ান তারকা আউট হলেও এক প্রান্ত আগলে রাখেন মুশফিক।

শেষ পর্যন্ত ডেভিড মিলারের ১৮ বলে ২২ রান এবং মুশফিকের ৩৮ রানের দায়িত্বশীল ইনিংসে ভর করে ৯ বল এবং ছয় উইকেট হাতে থাকতেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় বরিশাল।

রংপুরের হয়ে সর্বোচ্চ দুই উইকেট শিকার করেন আবু হায়দার রনি। এ ছাড়াও ফজল হক ফারুকি এবং মোহাম্মদ নবি একটি করে উইকেট নেন।

এর আগে টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে রংপুরের হয়ে ইনিংস শুরু করতে আসেন শেখ মাহেদী ও রনি তালুকদার। তবে শুরুটা ভালো হয়নি রংপুরের। এই জুটি ভয়ংকর হয়ে ওঠার আগেই রংপুরের শিবিরে আঘাত হানেন সাউফউদ্দিন। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারের শুরুতেই মাহেদীকে উইকেটের পেছনে মুশফিকের তালুবন্দি করেন তিনি। সাজঘরে যাওয়ার আগে ২ রান করেন এই ডানহাতি ব্যাটার। মেহেদী আউট হলে দ্বিতীয় উইকেটে ব্যাট হাতে আসেন সাকিব আল হাসান। তবে উইকেটে বেশিক্ষণ থিতু হতে পারেননি টাইগার অলরাউন্ডার। ব্যাট হাতে ব্যর্থ হয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনিও।

সাইফউদ্দিনের বলে দলীয় ১০ রানে মুশফিকের তালুবন্দি হয়ে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন তিনি। সাজঘরে যাওয়ার আগে ৪ বলে ১ রান করেন তিনি। এরপর তৃতীয় উইকেটে ব্যাট হাতে আসেন জেমি নিশাম। তাকে সঙ্গে নিয়ে শুরু ধাক্কা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন ওপেনার রনি। তবে উইকেটে থিতু হয়ে নিজের ইনিংস লম্বা করতে ব্যর্থ হয়েছেন রনি তালুকাদরও।

দলীয় ১৮ রানে আউট হয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি।  তাতে দ্রুত তিন উইকেট হারিয়ে চাপে পরে রংপুর। সেই চাপ সামলে দলকে এগিয়ে নিচ্ছিলো চতুর্থ উইকেট জুটিতে জেমি নিশাম ও নিকোলাস পুরাণ। যেখানে তাদের ব্যাটে রংপুর আশা দেখতেছিল ভালো কিছুর। কিন্তু সেই আশা আর বেশিক্ষণ স্থায়ী হতে দেননি বরিশাল।

দলীয় ৪৮ রানে পুরাণ আউট হলে ভাঙে এই জুটি। এরপর বেশিক্ষণ উইকেটে টিকেননি নিশামও। দলীয় ৪৮ রানে তিনিও ফেরেন সাজঘরে। প্যাভিলিয়নে যাবার আগে ২২ বলে ২৮ রান করেন তিনি। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকা রংপুর ষষ্ট উইকেটে লড়তে থাকেন নবী ও সোহানের ব্যাটে। তবে এই উইকেটে জুটিতেও এদিন ভরসা দিতে পারেননি রংপুরকে।

টুর্নামেন্টে এখন পর্যন্ত কয়েকবার ফাইনালে উঠলেও শিরোপা অধরা থেকে গেছে বরিশালের। এবার শিরোপার লড়াইয়ে পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের মুখোমুখি হবে তারা।