দুর্নীতি, লুটপাট করতেই সরকার জনগণের ভোট ছাড়া জোর করে ক্ষমতায় আছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। বিদ্যুৎ ও দ্রব্যমূল্য বাড়ার প্রতিবাদে শনিবার রাজধানীর নয়াপল্টনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখার লিফলেট বিতরণ ও গণসংযোগ কর্মসূচির উদ্বোধনী সমাবেশে এ অভিযোগ করেন তিনি।
তিনি বলেন, আজকের কর্মসূচি দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে, বাড়ছে, বাড়বে… আমরা এটাই জনগণকে জানাতে চাই। আর কিছুই নয়। গণতন্ত্র উদ্ধারে, বাকস্বাধীনতার ও ভোটের অধিকার রক্ষায় আমাদের চলমান অহিংস গণতান্ত্রিক আন্দোলন সারা দেশে চলবে।
মির্জা আব্বাস বলেন, গণতান্ত্রিক আন্দোলন কখনো ব্যর্থ হয়নি। সাময়িকভাবে বাধাগ্রস্ত হতে পারে কিন্তু সার্বিকভাবে কখনো ব্যর্থ হয়নি। আজকে না হয় কালকে জনতার হাতে এই সরকারের পতন ঘটবেই।
তিনি বলেন, মুসোলিনি-স্ট্যালিনরা বহুদিন রাজত্ব করেছে। কিন্তু পরিণতি হয়েছে ভয়াবহ। জনগণের আন্দোলনের মুখে কোনো ফ্যাসিস্ট সরকারই টিকে থাকতে পারেনি। এরা জোর করে জনগণের ভোটের বাইরে ক্ষমতায় টিকে আছে। ক্ষমতায় টিকে আছে লুটপাট করার জন্য, চুরি করার জন্য, দেশের মানুষকে কষ্ট দেওয়ার জন্য।
বিএনপি আন্দোলন করতে করতে এই পর্যন্ত এসেছে বলে উল্লেখ করে মির্জা আব্বাস বলেন, আমাদের বয়স হয়ে গেছে। এখন পরবর্তী যে প্রজন্ম আছে তাদেরকে সামনে নিয়ে আসতে হবে। এই স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। মনোবল ঠিক রাখতে হবে, ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে এবং নিজেদের মধ্যে গণতন্ত্রের বিকাশ ঘটাতে হবে। এই সরকারের পতন ঘটানোর জন্য ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই।
২৮ অক্টোবরে বিএনপির শান্তিপূর্ণ সমাবেশে পুলিশি হামলার ঘটনা সরকারের পূর্বপরিকল্পিত অভিযোগ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ২৮ তারিখ কী হয়েছিল? সেই প্রথম থেকে একটা নকশা করে, এটা ডিজাইন করে রাখা হয়েছিল যাতে বিএনপি নির্বাচনে আসতে না পারে, ক্ষমতায় আসতে না পারে, এই চক্রান্ত প্রথম থেকেই শুরু হয়েছে। সেজন্য দুই বছর আগে থেকে আমাদের নেতাকর্মীদের বেছে বেছে গ্রেপ্তার করা হয়।
তিনি বলেন, আমাদের ওপরে ২৮ তারিখে নির্মম নির্যাতন ও বর্বরোচিত হামলা হয়েছে। এই হামলায় আমি এবং মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ কয়েকজন শেষ পর্যন্ত মঞ্চে ছিলাম। সেই সময়ে আমরা দেখেছি যখন টিকে থাকা সম্ভব ছিল না, টিয়ার সেল আমাদের ট্রাকের মাঝে পড়েছে। সামনে রাইফেল হাতে পুলিশ দাঁড়ানো.. গুলি করবে। হয়ত তারা গুলি করেনি। আমরা নেমে যেতে বাধ্য হয়েছি। এমন নারকীয় ঘটনা ১৯৭১ সালে পাকিস্তান বাহিনীও ঘটায়নি সেটা সেদিন ওরা ঘটিয়েছে।
কারাগারে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপরে নির্মম নিপীড়ন-নির্যাতনের ঘটনা উল্লেখ করে মির্জা আব্বাস বলেন, এই নির্যাতন ও অত্যাচারে যেভাবে সীমা ছাড়িয়ে গেছে এটা আর সহ্য করা যায় না, বর্ণনা করা যায়। তারপরও আমাদের নেতাকর্মীরা এখনো তাদের মনোবল হারায়নি। তারা আশায় আছে তারা যুদ্ধ করবে এবং গণতন্ত্রকে মুক্ত করবে। অবশ্যই এই সরকারের পতন ঘটবেই।
মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালামের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনুর সঞ্চালনায় সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জাসাসের জাকির হোসেন রোকন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাদরেজ জামান, ছাত্র দলের রাকিবুল ইসলাম রাকিব, নাসির উদ্দিন নাসির প্রমুখ ।