বান্দরবানের ব্যাংক ডাকাতির ঘটনায় কুকি-চিনের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। আজ বুধবার দুপুরে সচিবালয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা জানান।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা হঠাৎ করে শুনলাম বান্দরবানে ব্যাংক ডাকাতির প্রচেষ্টা হয়েছে। আমাদের কাছে যা তথ্য এসেছে কুকি-চিন; এই গ্রুপটি আগেও জঙ্গি গোষ্ঠীর সঙ্গে আঁতাত করে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছিল। র‌্যাব ও আর্মি সেই ঘাঁটি সরিয়ে দিয়েছিল।’

‘ইদানীং আমরা দেখছিলাম, এই কুকি-চিন আবার বিভিন্নভাবে তাদের অবস্থান জানান দিচ্ছিল। রুমার ঘটনায় এ পর্যন্ত আমরা যা শুনেছি, সোনালী ব্যাংকে ঢোকার আগে তারা বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র বন্ধ করে। তারপর তারা সোনালী ব্যাংকের দিকে অগ্রসর হন,’ বলেন তিনি।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ‘সেখানে পুলিশ মোতায়েন ছিল এবং অধিকাংশই তারাবিহ নামাজরত ছিলেন। সেই সময় তারা ঢোকে। পুলিশের গার্ড কমান্ডার এএসআই (সহকারী উপপরিদর্শক) মামুনুর রহমান ও কনস্টেবল তৌহিদুল ইসলামকে আহত করে দুটি এসএমজি ও আটটি চাইনিজ রাইফেল লুট করেন। উপজেলা কমপ্লেক্সে আনসার বাহিনী যারা ছিল, তাদের শটগানও তারা লুট করে নিয়ে নেন।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের সোনালী ব্যাংকের ভল্ট একটা ভাঙেন, আরেকটি বোধ হয় ভাঙতে পারেননি। এগুলো আমাদের আনুষ্ঠানিক তথ্য নয়।’

বুধবার রাত নয়টার দিকে ৭০ থেকে ৮০ জনের একটি সশস্ত্র দল রুমাতে সোনালী ব্যাংকে হামলা চালায়।

সন্ত্রাসীরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছ থেকে ১৪টি অস্ত্র লুট করে এবং সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপক নিজাম উদ্দিনকে অপহরণ করে নিয়ে যায়।

এই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই বুধবার দুপুরে থানচিতে সোনালী ও কৃষি ব্যাংকে হামলা চালিয়ে ডাকাতি করেছে পাহাড়ি সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা। সেখানে ব্যাপক গোলাগুলির খবর পাওয়া গেছে। সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে গুলি চালাতে চালাতে ব্যাংক দুটির শাখায় প্রবেশ করে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে।

ব্যাংকে ডাকাতির সঙ্গে পাহাড়ি সশস্ত্র সংগঠন কেএনএফ সন্ত্রাসীরা জড়িত বলে স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের ধরতে এবং অপহৃত ম্যানেজারকে উদ্ধারে যৌথ অভিযানে নেমেছে নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

কেএনএফ; যারা পাহাড়ে ‘বম পার্টি’ নামে পরিচিত। তারা নিজেদের পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রান্তিক অঞ্চলের অনগ্রসর জনজাতিগুলোর ‘প্রতিনিধিত্বকারী’ নিজেদের পরিচয় দেয়।

সংগঠনটি একটি স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল চায়। যা ‘কুকি-চিন রাজ্যে’ নামে পরিচিত হবে। যেখানে চাকমা,মারমা ও ত্রিপুরারা থাকবে না। থাকবে বম, খিয়াং, পাংখুয়া, লুসাই, খুমি ও ম্রোরা।