গাজায় ইসরাইলি হামলা মোকাবিলায় মুসলিমপ্রধান দেশগুলোর ঐক্যের গুরুত্বের ওপর জোর দিতে হবে বলে জানিয়েছেন তুরস্কের প্রেসডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। সেই সাথে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতি কার্যকর করার জন্যেও মুসলিম বিশ্বকে এক হতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।

সোমবার (৮ই এপ্রিল) সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সাথে এক বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন। প্রেসিডেন্টের যোগাযোগ অধিদপ্তর এ তথ্য জানিয়েছে। এসময় মোহাম্মদ বিন সালমানকে এরদোয়ান বলেন, নিরাপত্তা পরিষদের যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্ত প্রয়োগের জন্য আরও বেশি যৌথ উদ্যোগ প্রয়োজন। এছাড়াও এ বৈঠকে দুই নেতা তুরস্ক ও সৌদি আরবের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক, আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক উন্নয়ন নিয়েও আলোচনা করেন।

তুরস্কের প্রেসিডেন্টের যোগাযোগ অধিদপ্তর জানিয়েছে, বৈঠকে সৌদি ক্রাউন প্রিন্সের কাছে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য আরও কার্যকর যৌথ প্রচেষ্টা প্রয়োজনের গুরুত্ব তুলে ধরেন এরদোয়ান।

এছাড়াও দুই নেতা তুর্কি-সৌদি আরব দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এবং আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক উন্নয়ন নিয়েও আলোচনা করেছেন বলেও জানিয়েছে প্রেসিডেন্টের কার্যালয়।

প্রসঙ্গত, গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ইসরায়েলের সবচেয়ে উগ্র সমালোচকদের একজন হলেন এরদোয়ান। একই সঙ্গে ইসরায়েলকে ‘সন্ত্রাসী রাষ্ট্র’ বলে অভিহিত করেছেন এবং গাজায় গণহত্যার জন্য অভিযুক্ত করেছেন তিনি।

অন্যদিকে, ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসের প্রতি পূর্ণ সমর্থন এবং গোষ্ঠীটিকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে শ্রেণীবদ্ধ করার পশ্চিমা অবস্থান প্রত্যাখ্যান করেছেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট।

এছাড়াও ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইসরায়েল যে যুদ্ধাপরাধ করছে তার জন্য ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে নাৎসিদের সঙ্গে তুলনা করেছেন এরদোয়ান।

প্রতিক্রিয়া নেতানিয়াহু জানিয়েছিলেন, তিনি এরদোয়ানের বিরুদ্ধে বক্তৃতা দেবেন না, কারণ ‘কুর্দি এবং সমালোচকদের বিরুদ্ধে চাপ ব্যবহার করার অভিযোগে তার নিজের দেশে সমালোচিত এরদোয়ান।’

উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা চালায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। এদিন ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলীয় ইরেজ সীমান্ত দিয়ে ইসরায়েলে প্রবেশ করে অতর্কিত হামলা চালায় হামাস যোদ্ধারা। তারপর ওই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বিমান বাহিনী। পরে ২৮ অক্টোবর থেকে অভিযানে যোগ দেয় স্থল বাহিনীও।

প্রায় ছয় মাস ধরে ইসরায়েলি বর্বরোচিত হামলায় ৩৩ হাজারের বেশি মানুষ নিহত ও ৭৬ হাজার আহত হয়েছেন। পাশাপাশি প্রায় ২০ লাখেরও বেশি ফিলিস্তিনির মধ্যে দুর্ভিক্ষের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।