পাঁচ ম্যাচ সিরিজের চতুর্থ টি-টোয়েন্টিতে সফরকারী জিম্বাবুয়েকে ৫ রানে হারিয়েছে টাইগাররা। শুক্রবার (১০ মে) শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আগে ব্যাট করে জিম্বাবুয়েকে ১৪৩ রানের টার্গেট দেয় বাংলাদেশ। জবাবে ১৩৮ রানে অলআউট হয় সিকান্দার রাজার দল। শেষ পর্যন্ত ৫ রানে হেরেছে জিম্বাবুয়ে।
শুক্রবার মিরপুরে পাঁচ ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের চতুর্থটিতে বাংলাদেশ খেলতে নামে একাদশ তিন বদল নিয়ে। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, লিটন দাস ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের জায়গা নেন সাকিব আল হাসান, সৌম্য সরকার ও মোস্তাফিজুর রহমান। ইনিংস উদ্বোধনে তানজিদ হাসান তামিমের নতুন সঙ্গী হন সৌম্য।
টস হেরে ব্যাট করতে নেমে দারুণ শুরু করেন তারা। একের পর এক বাউন্ডারি হাঁকাতে থাকেন তানজিদ হাসান তামিম, প্রথম দিকে অনেকক্ষণ আরেক প্রান্তে দাঁড়িযে সেটি দেখেন সৌম্য। পাওয়ার প্লের ছয় ওভারে ৫৭ রান করে বাংলাদেশ। তানজিদের রান তখন ২৭ বলে ৪০, সৌম্যের ৯ বলে ৬।
পাওয়ার প্লের ঠিক পরের ওভারে ব্রায়ান বেনেটকে রিভার্স সুইপে ছক্কা হাঁকিয়ে প্রথম বাউন্ডারি পান সৌম্য। ৩৪ বলে হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন তানজিদ, এই সিরিজেই অভিষেক হওয়া তানজিদ এ নিয়ে চার ম্যাচে দ্বিতীয় হাফ সেঞ্চুরি পান। ১২তম ওভারের প্রথম বলে গিয়ে তিনি আউট হলেই উদ্বোধনী জুটি ভাঙে।
আগের ওভারে লং অফে দাঁড়িয়ে তার সহজ ক্যাচ ছাড়েন ব্রায়ান বেনেট। মুখোমুখি হওয়া পরের বলে পয়েন্টে জন ক্যাম্পবেলের হাতে ক্যাচ দেন লুক জংওয়ের বলে। ৩৭ বলের ইনিংসে ৭ চার ও ১ ছক্কায় ৫২ রান করেন তানজিদ। ওই ওভারেই আউট হন তার উদ্বোধনী সঙ্গী সৌম্য সরকার। ৩৪ বল খেলে ৪১ রান করা এই বোলার ইয়র্কারে এলবিডব্লিউ হন।
দুই ওপেনারকে হারানোর পরের গল্পটা বাংলাদেশের জন্য কেবলই হতাশার। তিনে খেলতে নামা তাওহীদ হৃদয় আউট হন সিকান্দার রাজার বলে। ৮ বলে ১২ রান করে ডিপ স্কয়ার লেগে ক্যাচ দেন বেনেটের হাতে। পরের ওভারে বল হাতে এসে বাংলাদেশের আরও দুই উইকেট তুলে নেন বেনেট।
তার করা প্রথম বল ব্যাট ও প্যাডের মাঝখান দিয়ে গিয়ে আঘাত করে সাকিব আল হাসানের স্টাম্পে। ৩ বলে ১ রান করে ফেরেন তিনি। শেষ বলে শান্তকেও বোল্ড করেন বেনেট, বাংলাদেশ অধিনায়কের ব্যাট থেকে আসে ৭ বলে ২ রান।
পাঁচ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়া দলকে আর টেনে তুলতে পারেননি জাকের আলি অনিক, রিশাদ হোসেনরা। ১৭তম ওভারে এসে ৭ বলে ৬ রান করা জাকেরকে আউট করেন রিচার্ড এনগারাভা। ওই ওভারেই রান আউট হন তাসকিনও।
পরের ওভারে এসে রিশাদ হোসেনকে ইয়র্কারে বোল্ড করেন লুক জংওয়ে। ৪ বলে তিনি করেন ২ রান। শেষ অবধি এক বল বাকি থাকতে অলআউট হয়ে যায় বাংলাদেশ।
জিম্বাবুয়ের হয়ে ৩ ওভারে ২০ রান খরচায় ৩টি উইকেট নেন লুক জংওয়ে। দুটি করে উইকেট পান ব্রায়ান বেনেট ও রিচার্ড এনগারাভা। একটি করে পান সিকান্দার রাজা ও ব্লেসিং মুজারাবানি।
নির্ধারিত রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই হোঁচট খায় জিম্বাবুয়ে। প্রথম ওভারের চতুর্থ বলে রানের খাতা না খুলতেই ওপেনার ব্রায়ান বেনেটকে শূন্যরানে সাজঘরে ফেরান পেসার তাসকিন আহমেদ। ক্রিজে আসেন অধিনায়ক সিকান্দার রাজা। তাদিওয়ানাশে মারুমনিকে সাথে নিয়ে নতুন জুটি গড়েন রাজা। কিন্তু সেটিও বেশিদূর গড়ায়নি। দলীয় ২৮ রানে তাসকিনের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি। আউট হবার আগে করেন ১০ বলে ১৭ রান। পরের ওভারেই সাকিবের এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে পড়েন মারুমনি। ১৮ বল খেলে ১২ রান করে আউট হন ক্লাইভ মাদান্দে। রিশাদ হোসেনের বলে তিনিও মারুমনির মতো লেগ বিফোরে আটকে যান। ৫৭ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে রোডেশিয়ানরা।
এরপর ক্যাম্পবেলকে নিয়ে ৩৫ রানের জুটি গড়ে সাময়িকভাবে পরিস্থিতি সামাল দেন বার্ল। ১৯ রান করে প্যাভিলিয়নে ফেরেন তিনি। বার্ল ফিরে যাবার পর কিছুক্ষণ পর আউট হন জঙ্গুয়ে। একপ্রান্ত আগলে রাখা ক্যাম্পবেলকে ফেরান সাকিব। নাজমুল শান্তর হাতে ক্যাচ দিয়ে ৩১ রান করে ফিরে যান তিনি। এরপর ওয়েলিংটন মাসাকাদজার সাথে ২৫ রান্বের জুটি গড়েন ফারাজ আকরাম। কিন্তু সেটিও ইনিংসের শেষ ওভারে পৌঁছাতে ব্যর্থ। শেষ পর্যন্ত ইনিংসের শেষ ওভারের চতুর্থ বলে ১৩৮ রানে শেষ হয় জিম্বাবুয়ের ইনিংস।
বাংলাদেশের পক্ষে ৪টি উইকেট তুলে নেন সাকিব আল হাসান। এছাড়া ৩টি উইকেট পান মো¯াফিজুর রহমান। ২টি উইকেট তুলে নেন তাসকিন।