সরকার দেশে অরাজকতা সৃষ্টি করছে বলে দাবি করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে শুক্রবার বাংলাদেশ নাগরিক অধিকার আন্দোলনের উদ্যোগে ‘পানি-বিদ্যুৎ ও গ্যাসের মূল্য অযৌক্তিকভাবে বারবার বৃদ্ধি ও বগুড়ায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের উদ্বোধন করা ‘ম্যুরাল’ ভাঙার প্রতিবাদে’ এক বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

সরকার মাফিয়াবান্ধব মন্তব্য করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, সভ্য মানুষ আওয়ামী লীগ করে না। আওয়ামী লীগের নেতাদের জনপ্রতিনিধি হতে ভোট লাগে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যাকে চাইবেন তিনি নির্বাচিত হন। সোনা চোরাচালানকারীরা, মাদক সম্রাটরা এমপি হয় কী করে, এটাই সরকারের বহিঃপ্রকাশ।

রিজভী বলেন, এই সরকার সিন্ডিকেট ও মাফিয়াবান্ধব। এজন্য প্রত্যেকটি অপকর্মের দায়-দায়িত্ব সরকারকেই নিতে হবে। একদিন জনগণের আদালতে এদের প্রত্যেকের বিচার হবে। জনগণ বিচারক হয়ে এদের অপকর্মের বিচার করবে।

রিজভী বলেন, পানি, ডিজেল, গ্যাস, অকটেল এবং পেট্রোলের দাম বৃদ্ধি করেছে। জনগণ যাতে কষ্ট পায় সেজন্য জ্বালানির দাম বৃদ্ধি করলো সরকার। জনগণ হচ্ছে সরকারের কাছে পাইলট প্রজেক্ট। তারা মনে করছে, জনগণের রক্ত শোষণ করে এই প্রজেক্টটা এমন করব, যাতে বিশ্বের সব স্বৈরাচারদের কাছে দৃষ্টান্ত হয় এই সরকার।

ওয়াসার এমডি তাকসিম এ খানের সমালোচনা করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, তিনি তো খুব শক্তিশালী, বিদেশ থেকে অফিস পরিচালনা করেন। অনেক দুর্নীতি অভিযোগ থাকার পর তার চাকরির মেয়াদ বৃদ্ধি হয়, এতেই বোঝা যায় সরকারপ্রধান কেনো এই ধরনের লোকদের নিয়োগ করেন। এরা সরকারের পারপাস সার্ভ করেন। সরকারের যে অশুভ উদ্দেশ্য সেগুলো তারা পালন করে। এ কারণে তারা পানির দাম বৃদ্ধি করেছেন।

তিনি বলেন, সেনাবাহিনীর প্রধান ও পুলিশের প্রধানও যে মাফিয়াতন্ত্রের সঙ্গে যুক্ত, সেটা জনগণ কিছুটা জানলেও, বিস্তারিত জানতো না। তারা আন্দোলন দমন করেছে। তৎকালীন আইজিপি প্রকাশ্যে হুমকি দিয়েছে। কিন্তু তারা নিজেরাও যে এত বিত্তবৈভবের মালিক, এটা জনগণ এখন জানছে। কেন তাদের এই সুযোগ দেওয়া হয়েছে? কারণ এরাই তো বিএনপির মিছিল, কর্মসূচি, যেকোনও ধরনের সমাবেশ অত্যন্ত নির্দয়-নির্মমভাবে দমন করেছে। এর পুরস্কার হিসেবে শেখ হাসিনা তাদের একের পর এক পদোন্নতি দিয়েছেন।

বেনজীরকে এসপি থেকে পুলিশ কমিশনার, তারপর আইজিপি করেছেন উল্লেখ করে রিজভী বলেন, বেনজীর যে অপকর্ম করেছেন, শেখ হাসিনা সেগুলো দেখেও না দেখার ভান করেছেন। কারণ তিনিই তো অবৈধ। তিনি অবৈধ প্রধানমন্ত্রী থাকার জন্যই এরা নিবেদিতপ্রাণ হয়ে কাজ করেছে। এ জন্য তাদের পুরস্কৃত করা হয়েছে। তাই তাদের বিরুদ্ধে কোনও ধরনের ব্যবস্থা তারা নিতে পারে না।

বেনজীর-আজিজের মতো আরও অনেকে ঘাপটি মেরে আছে জানিয়ে তিনি বলেন, যারা জনগণকে দমন করে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে, তারা মাফিয়াবান্ধব সরকার, তারা সিন্ডিকেট বান্ধব সরকার। এই সরকারই হচ্ছে অপরাধী সরকার। বেনজীর ও আজিজের সব দায়দায়িত্ব আওয়ামী সরকারের। একদিন জনগণের আদালতে জনগণ বিচারক হয়ে এই সরকারের সব অপকীর্তির বিচার করবে।

রিজভী বলেন, জীবনের ওপর নাম পানি, যারা এই পানি কেড়ে নেয়, তারা তো ইয়াজিদের মতো। ইয়াজিদ যেমন ইমাম বাহিনীর পানি কেড়ে নিয়েছিল ফোরাত নদী অবরোধ করে। ইমাম বাহিনীর অনেক শিশু পানির তৃষ্ণায় কাতরাতে কাতরাতে মারা গিয়েছিল। সরকার তো সেটাই করছে জনগণের সঙ্গে।