কুমিল্লার মুরাদনগরে এক ব্যবসায়ীকে গলাকেটে হত্যার অভিযোগে চারজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া দণ্ডপ্রাপ্ত প্রত্যেক আসামিকে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) বেলা ১২টায় এই রায় দেন কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ পঞ্চম আদালতের বিচারক মোছা. ফরিদা ইয়াসমিন। মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) রফিকুল ইসলাম গণমাধ্যমকে এসব তথ্য জানিয়েছেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন–উপজেলার উত্তর ত্রিশ গ্রামের রফিক মিয়া, একই উপজেলার মির্জানগর গ্রামের সুমন মিয়া, আবদুল মান্নান ও ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার মাধবপুর গ্রামের নাজমুল শিকদার।
মামলা সূত্রে জানা যায়, জেলার মুরাদনগর উপজেলার কোম্পানীগঞ্জ বাজারে কাপড়ের ব্যবসা করত নিহত রাজু। তার প্রতিবেশী মোবাইল দোকানদার রফিকুল ইসলামের কাছে সে সাড়ে তিন লাখ টাকা পায়। এ আর্থিক লেনদেন নিয়ে তাদের সঙ্গে বিরোধ সৃষ্টি হয়।
এ বিরোধের জেরে রফিকুল স্থানীয় কসাই সুমনকে সঙ্গে নিয়ে হত্যার পরিকল্পনা করেন। সে অনুযায়ী ২০১৩ সালের ২ ডিসেম্বর রাজুকে মোবাইল ফোনে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করা হয়। তাঁর মাথা বিচ্ছিন্ন করে সেফটি ট্যাংকে ফেলে দেওয়া হয়। দেহটি মাটি চাপা দেওয়া হয়।
এ ঘটনায় নিহতের বাবা মো. মোস্তফা বাদী হয়ে মুরাদনগর থানায় আটজনকে সন্দেহভাজন আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ তদন্ত করে হত্যার সঙ্গে জড়িত চারজনকে আসামিকে করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে।
বে বিষয়ে এপিপি মো. রফিকুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী রফিকুল ইসলাম নিহত ব্যবসায়ী রাজুর পাওনা টাকা ফেরত না দেওয়ায় তার সঙ্গে বিরোধ সৃষ্টি হয়। এ জন্য তিনি কসাই সুমনসহ অন্যদের ভাড়া করেন। সবাই রাজুকে হাত–পা চেপে ধরে আর কসাই সুমন ছড়ি দিয়ে গলা বিচ্ছিন্ন করে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ বিষয়ে সবাই আদালতে স্বীকারোক্তি দেন। এ হত্যা মামলায় ৪৭ জন সাক্ষীর মধ্যে ২২ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষে ২২ সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাদের মৃত্যুদণ্ডাদেশ প্রদান করেন আদালত। এ ছাড়া প্রত্যককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। রায় ঘোষণাকালে সব আসামি পলাতক ছিলেন।’