ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরে সে আমলের দুর্নীতির নানা অভিযোগ সামনে আসছে। শেখ হাসিনা সরকারের সাবেক মন্ত্রী এমপিদের বিপুল অবৈধ সম্পদের তদন্তের দাবিও উঠেছে। এরইমধ্যে ১৯ জন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী এবং জাতীয় সংসদের ৩১ জন সাবেক  সংসদ সদস্যের অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধান করতে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) রোববার (১৮ই আগস্ট) আবেদন করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এম সরোয়ার হোসেন।

লিখিত আবেদনে আইনজীবী বলেন, ২০২৩ সালের ২৭ ডিসেম্বর একটি পত্রিকায় ‘অকল্পনীয় সম্পদ বৃদ্ধি মন্ত্রী-এমপিদের’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। উক্ত সংবাদের মাধ্যমে জানা যায়, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর আয় বেড়েছে সীমাহীনভাবে। দুর্নীতি ছাড়া এ রকম সম্পদ বৃদ্ধি সম্ভব নয়।

টিআইবি প্রকাশিত তথ্য উপস্থাপন করে ২৩ জন সাবেক মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী  এবং ৩১ জন এমপিদের উক্ত দুর্নীতির তথ্য তুলে ধরে দুদককে তা অনুসন্ধানের দাবি জানান তিনি।

আবেদনে বলা হয়, ‘জাতীয় দৈনিকের পাতা জুড়ে উক্ত অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পরও অনুসন্ধানের জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করে নাই, যা রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান যেমন দুর্নীতি দমন কমিশনের মতো প্রতিষ্ঠানের ওপর সাধারণ মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস ক্ষুন্ন করে এবং জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে। তাই আমরা চাই দ্রুত এদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করুক সংস্থাটি।”

 

আয় বৃদ্ধিতে শীর্ষে পাঁচ মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী

আয় বৃদ্ধির হারের হিসাবে সবার আগে আছেন সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশী। গত সরকারর আমলে তার আয় বেড়েছে ২১৩১ শতাংশ। তারপরে পর্যায়ক্রমে আছেন সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. জাহিদ মালেক (২৭৫%), বিদ্যুৎ, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ (২২৮%), ত্রাণ ও দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান (২২৭%) এবং সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি (২০৪%)।

 

১৫ বছরে সম্পদ বৃদ্ধিতে শীর্ষে যারা

অন্যদিকে, গত ১৫ বছরে যেসব মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর সম্পদ সবচেয়ে বেশি বেড়েছে তাদের মধ্যে প্রথমেই আছেন সাবেক খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার (৬৩৫০%)। তারপরে যথাক্রমে আছেন সাবেক গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন (২৮৫৮%), সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গাজী গোলাম দস্তগীর (২৭০৩%), সাবেক প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী ইমরান আহমেদ (২১৭৯%), সাবেক শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন (৯৮২%), সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. জাহিদ মালেক (৭৮৩%), সাবেক শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আাহমেদ মজুমদার (৪৯৩%) ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল (১২৯%)।