ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের চিকিৎসকদের ওপর হামলার ঘটনায় সব কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নিয়েছেন চিকিৎসকরা। এতে করে আগামীকাল বুধবার থেকে রুটিন অনুযায়ী পুরোদমে চিকিৎসা কার্যক্রম চলবে বলে জানিয়েছেন ঢামেক হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগের রেসিডেন্ট চিকিৎসক আব্দুল আহাদ।

মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের প্রশাসনিক ভবনের সামনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন এই ঘোষণা দেওয়া হয়।

আন্দোলনকারীদের পক্ষে ডা. আব্দুল আহাদ বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বাস্থ্য উপদেষ্টা আমাদের দাবিগুলো গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করেছেন। সিনিয়র স্বাস্থ্য সচিব স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইনের বিষয়ে পূর্ববর্তী সরকারে খসড়া অনুযায়ী তিন থেকে চার সপ্তাহ সময় চেয়েছেন। এ বিষয়ে যেসব অসঙ্গতি রয়েছে তা সংস্কার করে এ আইনের প্রস্তাবনা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে। সেখানে মতামত জানানোর সুযোগ থাকবে। স্বাস্থ্য পুলিশের বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে ফরোয়ার্ডিং দেওয়া হবে। আগামীকাল মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে একটি লিখিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে।

চিকিৎসক নেতা বলেন, স্বাস্থ্য পুলিশ গঠন ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইনের বিষয়ে দীর্ঘ ও তাৎপর্যপূর্ণ আলোচনা হয়েছে। স্বাস্থ্য সচিব এ বিষয়ে দ্রুত ও কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন। এ লক্ষ্যে একটি কার্যকরী কমিটি গঠন করা হবে। এতে আন্দোলনরত চিকিৎসকদের একটি প্রতিনিধি দল থাকবে। এ সময় ক্যাডার বৈষম্য, রেফারেল সিস্টেমসহ স্বাস্থ্যখাতের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

সংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে চিকিৎসকরা বলেন, আগামীকাল থেকে আমাদের সেবা পুরোদমে চলবে। আমরা ইতোমধ্যে কাজে আছি। কিছু বিভাগের কাজ বন্ধ ছিল। যা আগামীকাল থেকে চালু হবে।

শনিবার রাতে হাসপাতালে চিকিৎসকদের ওপর তিন দফায় হামলা ও মারধরের ঘটনা ঘটে। এরপর রাতেই কাজ বন্ধ করে দেয় ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। অন্য চিকিৎসকরাও তাদের কর্মবিরতিতে সংহতি জানালে রোববার সকাল থেকে হাসপাতালের সব বিভাগে চিকিৎসা সেবা বন্ধ হয়ে যায়।

হামলাকারীদের আটক ও শাস্তির পাশাপাশি সারা দেশে চিকিৎসক ও রোগীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাসহ দুই দফা দাবি জানানো হয় চিকিৎসকদের তরফ থেকে।

কিন্তু দাবি পূরণের আশ্বাস না মেলায় রোববার দুপুরে সারা দেশে সব চিকিৎসাকেন্দ্রে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ ঘোষণা করে ছয় দফা দাবি জানানো হয়।

পরে স্বাস্থ্য উপদেষ্টার আশ্বাসে ২৪ ঘণ্টার জন্য কর্মসূচি স্থগিত করা হয়। এরপরে পর্যায়ক্রমে হাসপাতালে প্রথমে জরুরি বিভাগে, এবং বিকেলে বর্হিবিভাগে সেবা দান শুরু হয়।