স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, হত্যা কিংবা অন্য অপরাধের বিচার করতে গিয়ে কোনভাবেই যাতে নিরীহ কোন মানুষ হেনস্তার শিকার না হয় সেজন্য সতর্ক থাকতে হবে। তিনি বলেন, এখন থেকে তদন্ত ছাড়া কোন হত্যা মামলার আসামিকে গ্রেপ্তার করা যাবে না।
আজ বৃহস্পতিবার (১৯শে সেপ্টেম্বর) সকালে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ সদর দপ্তরে মতবিনিময় শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা জানান।
সাম্প্রতিক সময়ে দায়ের করা মামলাগুলোয় বিপুল সংখ্যক আসামি প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেছেন, এখন পুলিশ মামলা করছে না, করছে সাধারণ জনগণ।
তিনি মন্তব্য করেন, “এখন পুলিশ বাদি হয়ে মামলা দিচ্ছে না। আগে পুলিশ বাদি মামলো হতো। এখন ভুক্তভোগিরাই মামলা করছেন। এটা ইতিবাচক।”
তিনি বলেন, ‘সাধারণ জনগণকে বলতে হবে, যারা প্রকৃতপক্ষে অপরাধী তার বিরুদ্ধে মামলা করো।’
দুইজন বাদীর সঙ্গে কথা হয়েছে জানিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, প্রকৃত অপরাধীকে ১১ নম্বর আসামি করা হয়েছে। অথচ হওয়ার কথা এক নম্বর আসামি।
‘তারা (বাদী) কার কাছে মামলা খসড়া প্রস্তুত করতে যায় আপনারা জানেন, এটা কিন্তু আমার পুলিশের কাছে যাচ্ছে না—অন্যের কাছে যাচ্ছে। তারা এটা এভাবে সাজিয়ে দিচ্ছে,’ গণমাধ্যমকর্মীদের উদ্দেশে বলেন তিনি।
এ সময় কেবলমাত্র প্রকৃত অপরাধীদের বিরুদ্ধে মামলার করার আহ্বান জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘অন্যের নাম দিলে তদন্ত করতে সময় বেশি যাচ্ছে। নিরীহ লোক যেন হেনস্থা না হয় সেদিকে খেয়াল রাখবেন।’
‘আমরা ইতোমধ্যে বলে দিয়েছি, তদন্ত ছাড়া কাউকেই গ্রেপ্তার করা হবে না। ধরার কথা অপরাধীদের, আমি সাধারণ মানুষকে তো ধরার জন্য বলবো না,’ যোগ করেন তিনি।
মানুষকে পিটিয়ে হত্যা করা হচ্ছে, এটি কীভাবে রোধ করা যায়—গণমাধ্যমকর্মীরা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এ ক্ষেত্রে জনসচেতনতা বাড়াতে হবে। কাল দেখলাম জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে…তারা তো সবচেয়ে শিক্ষিত, তাদের সচেতনতা আসতে হবে। একজন অন্যায় করলে তাকে আইনের হাতে সোপর্দ করেন, আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার অধিকার কারও নেই।’
পুলিশ কীভাবে তাদের পুরোনো গৌরব ফিরে পেতে তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, জনবান্ধব পুলিশ যেন বাস্তবে হয়। এটা যেন কাগজ কলমে না থাকে, সেটা তাদের বলেছি। থানা পর্যায়ে গিয়ে সমস্যার সমাধান হয় না, সব সমস্যার সমাধান সম্ভবও না। তবে তাদের কথা যেন মনোযোগ সহকারে শোনা হয়।
ট্রাফিক সমস্যা নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলেও এ সময় জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।
চাঁদাবাজি বন্ধে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘চাঁদাবাজি বন্ধ হলে জিনিসপত্রের দাম সহনীয় পর্যায়ে চলে আসবে।’