বাংলাদেশের তিনটি পার্বত্য জেলায় সংঘাত, সহিংসতা ও নিহতের ঘটনার প্রতিবাদে যে অবরোধের ডাক দেওয়া হয়েছে, তাতে সেখানকার জনজীবনে ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। যদিও ঘটনার শুরু হয়েছিলো খাগড়াছড়ির দীঘিনালাতে। কিন্তু পাহাড়ি-বাঙালি সংঘর্ষের ঘটনার রেষ ছড়িয়ে পড়েছে পার্শ্ববর্তী জেলা রাঙ্গামাটি ও বান্দরবানেও।
তিন পার্বত্য জেলায় শনিবারও থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পাহাড়ি-বাঙালি সংঘর্ষে চারজন নিহত ও অগ্নিসংযোগের প্রতিবাদে ‘বিক্ষুব্ধ জম্মু ছাত্র-জনতার’ ব্যানারে ডাকা তিন পার্বত্য জেলায় ৭২ ঘণ্টার সড়ক ও নৌপথে অবরোধে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ মানুষ। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ে রাঙামাটি প্রশাসনের সাথে বৈঠকে বসেছে অন্তর্বর্তী সরকারের তিন উপদেষ্টা।
খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটিতে হামলা, অগ্নিসংযোগ ও সহিংসতার প্রতিবাদে ৭২ ঘন্টা সড়ক ও নৌ পথ অবরোধ চলছে। অবরোধের কারনে এসব জেলা থেকে দুরপাল্লার কোন যানবাহন ছেড়ে যায়নি। এতে ভোগান্তিতে পরেছে এসব এলাকার সাধারণ মানুষ এবং পর্যটকরা।
তবে শহরের ভেতর কিছু হালকা যানবাহন চলছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। বর্তমানে জেলার সার্বিক আইন শৃংখলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক ও শান্ত রয়েছে। এখন পর্যন্ত কোথাও অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।
বান্দরবানে অবরোধে তেমন একটা প্রভাব নেই। সকাল থেকেই শহরের ভিতরে যানবাহনচলাচল করলেও দূরপাল্লার যানবাহন বন্ধ রয়েছে। এতে প্রায় দুইশতাধিক পর্যটক ভোগান্তিতে পড়েছে।
শুক্রবার এই তিন জেলায় সড়ক ও নৌ পথ অবরোধের ডাক দেয় জুম্ম ছাত্রজনতা। । কর্মসূচির প্রতি সমর্থন জানিয়ে অবরোধ পালনের ঘোষনা দিয়েছে আঞ্চলিক সংগঠন ইউনাইটেড পিপলস্ ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)।
এদিকে পার্বত্য এলাকার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষন করতে শনিবার রাঙামাটি পরিদর্শনে গেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সহ অর্ন্তবর্তী সরকারের তিন উপদেষ্টা। দুপুরে জেলার বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দের সাথে বৈঠকে বসেছেন তারা। প্রতিনিধি দলে রয়েছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ।
বুধবার ভোরে খাগড়াছড়ি সদরে চুরির অভিযোগে মামুন নামে একজনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। ওই ঘটনার জের ধরে দীঘিনালা ও খাগড়াছড়ি সদরে অপ্রীতিকর ঘটনায় ৩ জন নিহত । দীঘিনালায় পুড়িয়ে দেয়া হয় পাহাড়ি বাঙালির শতাধিক দোকানপাট। পরে রাঙামাটিতে সংঘর্ষে একজন নিহত হয়।