লক্ষ্মীপুরে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাহাব উদ্দিন সাবু’র বাসভবনে হামলা ও র্যাবের গুলিতে তাকে আহত করার ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রধান আসামী করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ ৩৫ জনের নাম উল্লেখ করে আদালতে মামলা হয়েছে। ঘটনার দীর্ঘ ১১ বছর পর বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) দুপুরে লক্ষ্মীপুর অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (সদর) আদালতে এ মামলাটির আবেদন করা হয়।
আদালতের বিচারক আবু সুফিয়ান নোমান আবেদনটি আমলে নিয়ে এফআইআর হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করতে সদর থানাকে নির্দেশ দিয়েছেন। ঘটনার হুকুমদাতা হিসেবে এ মামলায় শেখ হাসিনাকে প্রধান আসামি করা হয়।
২০১৩ সালের ১২ ডিসেম্বর জেলা বিএনপির এ নেতার বাসভবনে ঢুকে তাঁর ডান পায়ের উরুতে গুলি করে র্যাব সদস্যরা। ঐদিন র্যাবের গুলিতে আরও তিনজনের মৃত্যু হয়। হত্যার পর গুম করা হয় জেলা য্বুদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জুয়েলের লাশ।
এমামলায় অন্য আসামীরা হলেন তৎকালীন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী মহিউদ্দিন খান আলমগীর, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অবঃ) তারেক সিদ্দিকী, সাবেক পুলিশ প্রধান একেএম শহীদুল হক, র্যাবের সাবেক এডিজি মেজর জেনারেল (অবঃ) জিয়াউল আহসান, সাবেক এআইজি মাহফুজুর রহমান, সাবেক আইজিপি হাসান মাহমুদ খন্দকার, হাইওয়ে পুলিশের বর্তমান ডিআইজি মাহফুজুর রহমান, লক্ষ্মীপুরের সাবেক জেলা প্রশাসক মিজানুর রহমান, র্যাব-১১ এর সাবেক কর্মকর্তা লে. কর্নেল তারেক সাইদ, মেজর (অবঃ) মো. আরিফ, লে. কমান্ডার (অবঃ) রানা ডিএডি (অবঃ) জাহাঙ্গীর আলম, লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও সাবেক যুবলীগ নেতা একেএম সালাহ উদ্দিন টিপু, তার ভাই শিবলু, সাবেক পৌর মেয়র মোজাম্মেল হায়দার মাসুম ভূঁইয়া এবং র্যাাবের আরও ১৪ কর্মকতাসহ ৩৫ জন।
মামলার এজাহারে সাহাব উদ্দিন সাবুকে গুলি করে আহত করা ছাড়াও ঘটনার দিন র্যাবের গুলিতে বিএনপি কর্মী শিহাব ও মাহবুব এবং যুবদল নেতা ইকবাল মাহমুদ জুয়েলকে গুলি করে হত্যার ঘটনা উল্লেখ করা হয়। জুয়েলের মৃতদেহের সন্ধান পাওয়া যায়নি, সেটি গুম করা হয়।
এছাড়া র্যাবের গুলিতে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের বহু নেতাকর্মী গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত এবং পঙ্গুত্ব বরণ করার ঘটনা উল্লেখ করা হয়েছে। বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আহম্মদ ফেরদাউস মানিক মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সে সময়ের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী র্যাবের ডিজিসহ অন্যদের নির্দেশে র্যাব সদস্যরা বিএনপি নেতা সাহাব উদ্দিন সাবুকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি করে।
এতদিন তিনি আইনের আশ্রয় নিতে পারেননি। স্বৈরাচার সরকারের পতনের পর তিনি বিচারের জন্য আদালতের দারস্থ হয়েছেন।
আদালত বাদী এবং আইনজীবীদের বক্তব্য শুনে এজাহারটি সদর থানাকে এফআইআর হিসেবে নিতে নির্দেশ দিয়েছেন।