উন্নত চিকিৎসার জন্য বিএনপির চেয়ারপরসন বেগম খালেদা জিয়াকে শিগগিরই বিদেশে নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক এ জেড এম জাহিদ হোসেন। তিনি বলেন, প্রথমে ‘লং ডিসটেন্স স্পেশালাইজড এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে যুক্তরাজ্যের লন্ডনে নেয়া হবে। এরপর সেখানে থেকে তাকে তৃতীয় একটি দেশে মাল্টি ডিসিপ্ল্যানারি মেডিকেল সেন্টারে নেয়া হবে।
আজ মঙ্গলবার খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক এবং বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. জাহিদ হোসেন এ কথা জানান।
ডা. জাহিদ বলেন, ‘সবকিছুই তার (খালেদা জিয়া) স্বাস্থ্যের অবস্থার ওপর নির্ভর করছে। তার স্বাস্থ্য যদি ভ্রমণের উপযোগী হয় তাহলে তাকে যুক্তরাজ্যে নিয়ে যাওয়া হবে।’
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে লিভারসিরোসিস, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, হার্ট ও চোখের সমস্যাসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছেন। গত জুনে তার হৃদযন্ত্রে পেসমেকার বসানো হয়।
এর আগে সেপ্টেম্বরে ডা. জাহিদ বলেছিলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসনকে কীভাবে বিদেশে নেওয়া হবে, তাও ঠিক করা হয়েছে। আইনগত যে জটিলতা আছে, সেটা নিয়ে বর্তমান সরকারের সঙ্গেও কথা বলেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘তার শারীরিক কন্ডিশনের ওপর নির্ভর করছে কত দ্রুত তাকে বিদেশে নেয়া যায়। প্রথমে তাকে লন্ডনে নেয়া হবে। সেখানে স্টেওভারের পরে মাল্টি ডিসেপ্ল্যানারি মেডিকেল সেন্টার যে দেশে রয়েছে, সেখানে নেয়া হবে। আশা করছি, সব কাজ সম্পন্ন করেই অতিদ্রুতই ম্যাডাম বিদেশে যেতে পারব। সব পাসপোর্ট ও ভিসা হয়ে গেছে। তার সঙ্গে যাবেন এমন ১৫ জনের তালিকাও করা হয়েছে।’
খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা কেমন জানতে চাইলে অধ্যাপক জাহিদ বলেন, ‘ম্যাডাম গুলশানের বাসায় আগের মতোই মেডিকেলবোর্ডের সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধানে রয়েছেন। বলতে পারেন উনার অবস্থা স্থিতিশীল।’
তিনি আরও বলেন, ‘খালেদা জিয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বিদেশে চিকিৎসার জন্য যাবেন, এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়েও তার কার্যালয় থেকে চিঠি দেয়া হয়েছে। ম্যাডামের সঙ্গে চিকিৎসক-নার্সসহ আত্মীয়-স্বজন যারা যাবেন তা জানানো হয়েছে। খোঁজ-খবর নিয়ে জানা গেছে, বিএনপি চেয়ারপারসনের লিভারট্রান্সপারেন্ট করতে হবে। এটি যুক্তরাষ্ট্রে মাত্র দু-একটি সেন্টার রয়েছে। সেখানে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হয়েছে।’
৭৯ বছর বয়সী সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী লিভার সিরোসিস, হৃদরোগ, ফুসফুস, আর্থ্রাইটিস,কিডনি, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন জটিলতায় ভুগছেন। ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে বিভিন্ন সময়ে আইসিইউতে রেখে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে মেডিকেল বোর্ডের মাধ্যমে তাকে দীর্ঘ সময়ে চিকিৎসা নিতে হয়েছে।
ছাত্র-জনতার বিপ্লবের পরে সবশেষ ২১ আগস্ট এভারকেয়ার হাসপাতালে এক মাস চিকিৎসাধীন থেকে বাসায় ফেরেন খালেদা জিয়া।
এভারকেয়ার হাসপাতালের হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে একটি বিশেষজ্ঞ মেডিকেল বোর্ড খালেদা জিয়া চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত রয়েছেন। এই টিমে দেশের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ছাড়াও লন্ডন থেকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী কার্ডিওলস্টি ডা. জোবাইদা রহমান এবং যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়ার কয়েকজন চিকিৎসকও রয়েছেন।