মালদ্বীপ ফুটবল ফেডারেশনে চলছে অস্থিরতা। ফিফা নিযুক্ত প্রশাসক দিয়ে চলছে দেশটির ফুটবল। অভ্যন্তরীণ সংকটে এক বছর ধরে আন্তর্জাতিক ফুটবলের বাইরে তারা। এমন সংকটে থাকা মালদ্বীপকে দেশের মাটিতে পেয়েও হারাতে পারলো না বাংলাদেশ। বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় ফিফা ফ্রেন্ডলি সিরিজের প্রথম ম্যাচে মালদ্বীপের কাছে ১-০ গোলে হেরেছে বাংলাদেশ। ম্যাচের ১৯তম মিনিটে মালদ্বীপের হয়ে একমাত্র গোলটি করেন আলী ফাসির। আগামী শনিবার একই স্টেডিয়ামে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচটিতে মুখোমুখি হবে দু’দল।

কিংস অ্যারেনায় ম্যাচের শুরু থেকে লাগাম নিজেদের কাছে রাখার চেষ্টা করে বাংলাদেশ। ৪-৪-২ ছকে বাঁদিক দিয়েই বেশি আক্রমণ হচ্ছিল। কখনও ফাহিম কিংবা রাকিব, কখনও আবার মোরসালিন ছিলেন আক্রমণের নেতৃত্বে। কিন্তু ফিনিশিং ব্যর্থতায় গোল পাওয়া হয়নি। বল কখনও বারে লেগে প্রতিহত কিংবা ক্রসবারের ওপর দিয়ে গেছে। আবার রক্ষণে বাধা পড়েছে। আর পরিষ্কার করে বললে মালের গোলকিপার হুসাইন শরীফ ছিলেন চীনের প্রাচীরের মতো বড় বাধা।।

প্রথমার্ধে বাংলাদেশের আক্রমণে নেতৃত্ব দিলেও কিছুটা অগোছালো ভাব ছিল। গোলকিপার মিতুল মারমা একাধিকবার ভুল করতে গিয়ে গোল প্রায় খেয়েই যাচ্ছিল দল। এছাড়া ব্যাক পাস কিংবা কিছু ভুল পাসের প্রবণতা ছিল।

মালদ্বীপ দেখে-শুনে খেলেছে। রক্ষণে জোর দিয়ে প্রতি আক্রমণে উঠে গোল পেয়েছে।

তারপরও ম্যাচের শুরুতে বাংলাদেশ গোল প্রায় পেয়েই যাচ্ছিল। ৪ মিনিটে ঈসা ফয়সালের ক্রসে শেখ মোরসালিন বক্সের ভেতরে থেকে হাওয়া ভাসা বলে মাথা চালিয়ে দেন। তবে তা ক্রসবারের অনেক ওপর দিয়ে গিয়ে সমর্থকদের হতাশ করে।

দুই মিনিট পর শেখ মোরসালিনের মাটি গড়ানো শট ৬ গজ দূরত্বে থেকে এক ডিফেন্ডার ক্লিয়ার করেন।

১৪ মিনিটে ব্যাকফ্লিক থেকে আর একটু হলেই মালদ্বীপ গোল পেতে পারতো। তবে কোনোমতে বল তালুবন্দি করে তা হতে দেননি মিতুল। একটু পর ফাহিমের ক্রসে রাকিব ঠিকমতো লক্ষ্যে হেড নিতে পারেননি।

ধারার বিপরীতে গোল হজম করে বাংলাদেশ। হামজা মোহাম্মদের দারুণ এক মাপা ফ্রি কিকে পোস্টের সামনে থেকে আলী ফাসির ফাঁকায় আলতো করে মাথা ছুঁইয়ে দেন। এসময় ডিফেন্ডার কিংবা গোলকিপার কেউই বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেননি।

এক গোলে পিছিয়ে থেকে আবারও আক্রমণে যায় বাংলাদেশ। ১৯ মিনিটে ফাহিমের ক্রসে রাকিব পা ছোঁয়ানোর আগেই গোলকিপার ব্লক করেন। এরপর দ্রুত বিপদমুক্ত করেন সামোহ আলী।

২৯ মিনিটে ঈসার ক্রসে ফাহিমের বাঁ পায়ের সাইড ভলি অন টার্গেটে থাকেনি।

৪৪ মিনিটে বল ক্রসবার কাঁপালেও গোল পাওয়া হয়নি। সোহেল রানার দূরপাল্লার শট সাইডবারে লেগে প্রতিহত হলে সমতায় ফেরা হয়নি।

বিরতির পর মালদ্বীপ কিছু সময় রাজত্ব করে। তবে ব্যবধান বাড়াতে পারেনি। বাংলাদেশও পারেনি সমতায় ফিরতে।

৪৯ মিনিটে আহমেদ আইয়ামের জোরালো শট সাইড পোস্টে লেগে ব্যবধান বাড়েনি। চার মিনিট পর আলী ফাসিরের শট গোলকিপার বাঁদিকে ঝুঁকে পড়ে রুখে দেন।

৫৭ মিনিটে আলী ফাসিরের ফ্রি-কিক অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ৬২ মিনিটে বক্সের ভিতরে হামজা বল পাওয়ার আগে নিশ্চিত গোল বাঁচান রাকিব হোসেন। তখন হামজার সামনে শুধু গোলকিপার ছিল।

দুই মিনিট পর  চন্দন রায়, শাহরিয়ার ইমন ও মজিবর রহমান জনি নামেন। তাতে আক্রমণে আবারও স্বাগতিকদের প্রাধান্য। ৬৯ মিনিটে সাদ উদ্দিনের ক্রসে শাহরিয়ার ইমনের হেড অল্পের জন্য বাইরে দিয়ে যায়। ৫ মিনিট পর শাহরিয়ার ইমনের সঙ্গে ওয়ান টু খেলে জনির বুলেট গতির শট গোলকিপার ঝাঁপিয়ে পড়ে রুখে দিয়ে সমতায় ফিরতে দেননি।

৮৬ মিনিটে রাকিবের পাসে মোরসালিনের শট গোলকিপার বাঁদিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে প্রতিহত করেন। আর শেষ দিকে মোরসালিন-রাকিব চেপে ধরলেও গোলের দেখা মেলেনি। হারের দুর্ভাগ্য নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছে কাবরেরার দলকে। ২০২২ সালের ২৪ মার্চের পর আবারও মালদ্বীপের কাছে হারলো বাংলাদেশ। পরের ম্যাচটি হবে ১৬ নভেম্বর।