গাজা উপত্যকাজুড়ে গেল ২৪ ঘণ্টায় ৩০ দফা হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। শনিবারের (৪ জানুয়ারি) এ হামলায় কমপক্ষে ৭০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে অনেক শিশু রয়েছে। এতে করে উপত্যকাটিতে নিহতের মোট সংখ্যা ৪৫ হাজার ৭০০ ছাড়িয়ে গেছে। রবিবার (৫ জানুয়ারি) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা এ খবর জানিয়েছে।

ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ মনে করছে, গাজা উপত্যকা জুড়ে ধ্বংস হওয়া বাড়ির ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও ১০ হাজারেরও বেশি লোক নিখোঁজ রয়েছেন। মূলত  গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব সত্ত্বেও ইসরায়েল অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে তার নৃশংস আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে।

এদিকে গাজায় ধ্বংসযজ্ঞ চালানোর পরেও ইসরায়েলকে আরও ৮০০ কোটি ডলারের অস্ত্র বিক্রির পরিকল্পনা করছে ওয়াশিংটন। গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযানের শুরু থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন ছিল। সেখানে ইসরায়েল গণহত্যা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ইসরায়েলি বাহিনী অবরুদ্ধ ওই অঞ্চলে কোনো ধরনের মানবিক সহায়তাও পৌঁছাতে দিচ্ছে না। ফলে তীব্র খাদ্য সংকটে অনাহারে দিন কাটাচ্ছে লাখ লাখ মানুষ। এতকিছুর পরেও যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন বন্ধ করেনি।

 

ইসরায়েলকে অস্ত্র সহায়তা না দেওয়ার জন্য বিশ্বজুড়েই বিক্ষোভ-চলছে। কিন্তু ইসরায়েলের নীতিতে কোনো পরিবর্তই আসিনি। বরং গত আগস্টেও ইসরায়েলকে যুদ্ধবিমান এবং অন্যান্য সামরিক সরঞ্জামসহ ২০০ কোটি ডলারের অস্ত্র সহায়তার অনুমোদন দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন হামলার পর থেকে গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। এ হামলা থেকে বাদ যায়নি ২৩ লাখ বাসিন্দার এই উপত্যকার মসজিদ, বিদ্যালয়, হাসপাতাল, আবাসিক ভবন, এমনকি শরণার্থী শিবিরও।

ইসরায়েলি নির্বিচার হামলা গাজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। জাতিসংঘের তথ্য মতে, ইসরায়েলের আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি ও ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে গাজাবাসী চরম মানবেতর জীবনযাপন করছে।

দখলদার দেশটির নিরলস হামলা এখন পর্যন্ত ৪৫ হাজার ৬০০ এর বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন এক লাখ আট হাজার পাঁচ শর বেশি ফিলিস্তিনি।