জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র নিয়ে আগামী বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) সর্বদলীয় বৈঠক হবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। আজ মঙ্গলবার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান তিনি।

মাহফুজ আলম বলেন, ‘(আলোচনার) স্থান এখনো নির্ধারিত হয়নি। খসড়া ঘোষণাপত্র নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে অনির্ধারিত আলোচনা হয়েছে। বিএনপি, জামায়াত, গণতন্ত্র মঞ্চসহ রাজনৈতিক দল ও শ্রেণি–পেশার সঙ্গে অনির্ধারিত আলোচনা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‌’গত ৩১ ডিসেম্বর শিক্ষার্থীরা জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করতে চেয়েছিল। পরে সরকার বিষয়টি নিয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করে। গত ১৫ দিন জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে আমরা কাজ করেছি। শিক্ষার্থীদের ঘোষণাপত্র অবলম্বনে উপদেষ্টা পরিষদের পক্ষ থেকে একটা খসড়া প্রস্তুতের চেষ্টা করেছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি সবাই জুলাই ঘোষণাপত্রের বিষয়ে একমত আছেন যে ঘোষণাপত্র দিতে হবে। কিন্তু কবে ঘোষণা হবে বা এর ভেতরে কী কনটেন্ট থাকবে, সে বিষয়ে আমরা ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারিনি।’

‘তবে এটা নিয়ে আগামী বৃহস্পতিবার সর্বদলীয় বৈঠক হবে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং পক্ষকে আমরা বৈঠকের কথা বলেছি। তাদের কাছ থেকে মন্তব্য পেয়েছি যে কীভাবে এটা করা সম্ভব,’ বলেন তিনি।

উল্লেখ্য, অনেক আগে থেকেই জুলাই ঘোষণাপত্রের দাবি তুলেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি। সেই দাবি পূরণ না হওয়ায় ৩১ ডিসেম্বর ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ‘মার্চ ফর ইউনিটি’ (ঐক্যের জন্য যাত্রা) ডাক দেয় সংগঠনগুলো। সেখানেই জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র প্রকাশ করতে চেয়েছিল।

বিষয়টি টের পেয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রেস উইং তখন জানায়, এই উদ্যোগের সঙ্গে সরকার সম্পৃক্ত নয়। এর একদিন পর ৩০ ডিসেম্বর রাতে জরুরি প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের একটি ঘোষণাপত্র তৈরির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এর পরেই জুলাই ঘোষণাপত্রের কর্মসূচি থেকে সরে আসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি।

তবে তারা তাদের কর্মসূচি পাল্টায়নি। ৩১ ডিসেম্বর শহীদ মিনারে ‘মার্চ ফর ইউনিটি’ (ঐক্যের জন্য যাত্রা) কর্মসূচি থেকে জুলাই ঘোষণাপত্র প্রকাশের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় বেঁধে দেয়া হয়।

এ লক্ষ্যে প্রতিদিনই জনমত তৈরিতে সারা দেশে প্রচারপত্র বিলি ও জনসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি।