যুদ্ধবিরতির মধ্যেই গাজায় নির্বিচার হামলা শুরু করেছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী (আইডিএফ)। আজ মঙ্গলবার সকালে উপত্যকাজুড়ে ব্যাপক বোমা হামলা চালিয়েছে তারা। সবশেষ পাওয়া খবর পর্যন্ত ২৩২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, আহত আরও অনেকে। ১৯ জানুয়ারি যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার পর গাজায় এটিই ইসরায়েলের সবচেয়ে বড় হামলা। মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, গাজার উত্তরাঞ্চল, গাজা সিটি, দেইর আল বালাহ, খান ইউনিস, জাবালিয়াসহ বেশ কয়েকটি জায়গায় বিমান হামলার খবর পাওয়া গেছে। হামলাগুলো বাড়ি-ঘর, আবাসিক ভবন, বাস্তুচ্যুত লোকদের আশ্রয় দেওয়া স্কুল এবং তাঁবুগুলিতে আঘাত হানে। এতে নারী ও শিশুসহ বহু মানুষ হতাহত হয়।
হামাসের দাবি, একতরফাভাবে যুদ্ধবিরতি চুক্তি শেষ করে দিয়েছে ইসরায়েল। নেতানিয়াহু ও তার উগ্রপন্ত্রী সরকার যুদ্ধবিরতি চুক্তি বানচালের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর ফলে গাজায় থাকা ইসরায়েলি জিম্মিদের ভবিষ্যৎ কী হবে, তা এখন অনিশ্চিত।
হামলার পর ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে একটি বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে। যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপ শুরুর আলাপ ব্যর্থ হওয়ার পরই হামলা শুরু করা হয়েছে বলে জানানো হয় বিবৃতিতে। বলা হয়, ‘হামাস যুদ্ধবিরতি ইস্যুতে মার্কিন প্রেসিডেন্টের দূত স্টিভ উইটকফ ও মধ্যস্থতাকারীদের সব প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে এবং জিম্মিদের ফেরত দিতে বারবার অস্বীকৃতি জানিয়েছে। সেকারণেই আবার হামলা শুরু করা হলো।’
বিবৃতিতে হামাসকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলা হয়েছে, ‘ইসরায়েল এখন থেকে হামাসের বিরুদ্ধে ক্রমবর্ধমান সামরিক শক্তি প্রয়োগ করবে।’ বিবৃতিতে জানানো হয়, গত সপ্তাহে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী এই হামলার পরিকল্পনা প্রস্তাব করে। পরে, রাজনৈতিক নেতাদের অনুমোদনের পরই তা বাস্তবায়ন করা হয়েছে।
আগামীকাল বুধবার গাজা পরিস্থিতি নিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে জানিয়ে জাতিসংঘে ইসরায়েলি দূত ড্যানি ড্যানন হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ‘শত্রুদের প্রতি কোনো দয়া দেখানো হবে না। আমি খুব পরিষ্কার করে বলছি, যতক্ষণ পর্যন্ত হামাসের হাতে থাকা শেষ জিম্মিটিও মুক্ত হচ্ছে না, ততক্ষণ ইসরায়েল থামবে না। (জাতিসংঘ) নিরাপত্তা পরিষদেরও আমি বিষয়টি স্পষ্ট করে বলব— যদি তারা যুদ্ধ বন্ধ করতে চায় তাহলে হামাসের হাতে বন্দী জিম্মিদের মুক্তি নিশ্চিত করতে হবে।’
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেছেন, গাজায় এমন মাত্রার হামলা চালাবে ইসরায়েলি সেনারা যা হামাস কল্পনাও করতে পারছে না। গাজায় ‘জাহান্নামের দরজা’ খুলে দেওয়া হবে হুঁশিয়ারি দেন তিনি।