দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, খুব সজাগ থাকতে হবে। মনে রাখতে হবে সংগ্রাম এখনও শেষ হয়নি। গণতন্ত্রের উত্তরণ এখনও হয়নি। আমরা নির্বাচনের মধ্য দিয়ে নির্বাচিত সরকার ও সংসদ পাইনি। ফলে দলকে আরও সুদৃঢ় ও শক্তিশালী করতে হবে।

দেশের বিদ্যমান রাজনৈতিক অবস্থা তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজকে আমাদের পরীক্ষার সময়। পত্রপত্রিকা, টেলিভিশন, টকশো– সবকিছুতে কেমন একটা অস্থিরতা চলছে। কতগুলো নির্ধারিত বিষয়কেও অনির্ধারিত করে ফেলা হয়েছে। অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে অনেক কিছু। আজ সংস্কার, নির্বাচন– কথাগুলো অনেক বেশি উচ্চারিত হচ্ছে। সবার দায়িত্ব, অত্যন্ত ধৈর্যের সঙ্গে সমস্যাগুলো আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা।

শ্রমিকদের সংস্কার কোথায়– প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, এত সংস্কারের কথা হচ্ছে। কিন্তু শ্রমজীবী, শ্রমিকদের কথা কোথাও শুনছি না। আমাদের ৩১ দফার মধ্যে শ্রমজীবী মানুষের কথা বলা হয়েছে। বর্তমানে সংস্কার কমিশনগুলোর প্রস্তাবের মধ্যে এ নিয়ে কী আছে, তা জানি না।

মির্জা ফখরুল বলেন, কৃষক তার পণ্যের ন্যায্যমূল্য পান না, পানি পান না। যখন সেচের পানি প্রয়োজন, তখন সমস্যার সমাধান হয় না। শ্রমিকদের সন্তানরা ভালো স্কুলে যেতে পারে না; গেলেও বই পায় না। অথচ এই কথাগুলো আলোচনাই হয় না।

তিনি বলেন, খুব ভালো করে লক্ষ্য করে দেখবেন– টেলিভিশন বলেন, টকশো বলেন, এমনকি টেলিভিশনের নাটকেও কিন্তু সাধারণ মানুষ অনুপস্থিত। শ্রমজীবীরা কোথাও নেই। অথচ এরাই দেশের বড় অংশ। ২০২৩ সালের ৭ ডিসেম্বর বিএনপি অফিসের সামনে পুলিশের গুলিতে শহীদ হন মকবুল, তিনি কারখানা শ্রমিক ছিলেন। ভোলার শাওন অটোরিকশা চালাতেন; মুন্সীগঞ্জ-নারায়ণগঞ্জে ফ্যাসিস্টবিরোধী আন্দোলনে যারা আত্মাহুতি দিয়েছেন, তারাও শ্রমিক ছিলেন।

ছাত্রদল কর্মী পারভেজের হত্যাকারীরা গণতন্ত্রের পক্ষের নয়– মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, যারা এ সময় ত্যাগী ছাত্রনেতাকে হত্যা করতে পারে, তারা নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের নতুন পরিবর্তনের আন্দোলনে যুক্ত ছিল না। বাংলাদেশে যারা বিভাজন সৃষ্টি করতে চায়, তারা এ দেশের পক্ষের নয়। তারা গণতন্ত্র ও শ্রমজীবী মানুষের পক্ষের নয়।

অনুষ্ঠানে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, দলের ভাইস চেয়ারম্যান আহমদ আজম খান, বিএনপির চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, আবদুল্লাহ আল নোমানের ছেলে সাঈদ আল নোমান প্রমুখ।