ভারতশাসিত জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগামে প্রাণঘাতী হামলার জেরে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বাড়তে থাকা উত্তেজনা কমাতে মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়েছে ইরান। শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সৈয়দ আব্বাস আরাগচি এ প্রস্তাব দিয়ে দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে বোঝাপড়ার জন্য কূটনৈতিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

আব্বাস আরাগচি বলেন, “ভারত ও পাকিস্তান ইরানের ভাতৃপ্রতীম প্রতিবেশী। আমরা এমন সম্পর্ক উপভোগ করছি যা কয়েক শতক পুরনো সাংস্কৃতিক সভ্যতায় নীহিত। অন্যান্য প্রতিবেশীর মতো তাদেরও আমরা সর্বাগ্রে অগ্রাধিকার হিসেবে বিবেচনা করি। ইসলামাবাদ ও নয়াদিল্লিতে থাকা আমাদের দূতাবাসের মাধ্যমে আমরা এই কঠিন সময়ে দুই দেশের মধ্যে বৃহৎ বোঝাপোড়া তৈরি করতে চাই।”

ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক্রো ব্লগিং সাইট এক্সে মধ্যস্থতার প্রস্তাব দেওয়া পোস্টে পার্সিয়ান কবি সাদির একটি কবিতাও উল্লেখ করেছেন। এ কবিতায় সাদি লিখেছেন, “মানুষ একটি একক পরিবার, যদি পরিবারের কেউ ব্যথিত হয়, অন্য সদস্যদের অস্বস্তিও রয়ে যাবে।”

গত মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মিরের পেহেলগাম এলাকায় ভয়াবহ সশস্ত্র হামলায় ২৬ জন নিহত হন। এই ঘটনায় পাকিস্তানকে পরোক্ষভাবে দায়ী করে ভারত।

জবাবে নয়াদিল্লি কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়ে পাকিস্তানের সঙ্গে করা সিন্ধু নদের পানি বণ্টন চুক্তি বাতিলের হুমকি দেয়। পাশাপাশি পাকিস্তানের নাগরিকদের ভিসা সুবিধা স্থগিত এবং প্রধান সীমান্ত ক্রসিং বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয় ভারত। এর পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তানও ভারতীয় নাগরিকদের ভিসা বাতিল করে, সীমান্ত ক্রসিং বন্ধ করে দেয় এবং ভারতীয় বিমানকে আকাশসীমা ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা দেয়।

ভারতের জলশক্তিমন্ত্রী শুক্রবার বলেন, সিন্ধু নদের এক ফোঁটাও যেন পাকিস্তানে না যায়, সে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়ে পাকিস্তান জানায়, ভারত যদি পানি প্রবাহ বন্ধ করার চেষ্টা করে, তবে তারা তা যুদ্ধ ঘোষণার শামিল হিসেবে বিবেচনা করবে এবং প্রয়োজনীয় জবাব দেবে।

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ইরানের মধ্যস্থতার প্রস্তাব আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ইতিবাচকভাবে বিবেচিত হলেও, এখনো নয়াদিল্লি ও ইসলামাবাদ এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি।