বজ্রপাত ও ঝড়ে সারাদেশে একদিনে ১৪ জন প্রাণ হারিয়েছেন। রোববার (১১ মে) দুপুর থেকে রাতের মধ্যে এ প্রাণ হারানোর ঘটনা ঘটে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া নাসিরিনগর ও আখাউড়ায় বজ্রপাতে শিশু ও কৃষকসহ পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। দুপুরে নাসিরনগর সদর ইউনিয়নের টেকানগর গ্রামে, একই উপজেলার গোকর্ণ ইউনিয়নের বেড়িবাঁধ এলাকায়, ভলাকুট ইউনিয়নের ও আখাউড়ায় এ সব বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে।

মৃতদের মধ্যে চারজনের পরিচয় জানা গেছে। তারা হলেন— নাসিরনগর সদর ইউনিয়নের টেকানগর গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক (৩৫), আখাউড়ার শেখ সেলিম মিয়া (৬০), জামির খাঁ (২২) ও লাকুট ইউনিয়নের দুর্গাপুর গ্রামের জাকিয়া (৭)।

এদিকে কিশোরগঞ্জের ভৈরব, কুলিয়ারচর ও করিমগঞ্জে বজ্রপাতে চারজন মারা গেছেন। রোববার বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

মৃতদের মধ্যে তিনজনের পরিচয় জানা গেছে। তারা হলেন- ভৈরবের সাদেকপুর ইউনিয়নের রসুলপুর গ্রামের ফারুক মিয়া (৬০), শ্রীনগর ইউনিয়নের ফয়সাল মিয়া (২৮) এবং কুলিয়ারচরের ছয়সূতি ইউনিয়নের হাজারীনগর গ্রামের কবির মিয়া (২৫)।

কালবৈশাখী ঝড়ের তাণ্ডবে ময়মনসিংহ সদরের আলাদা স্থানে গাছ উপড়ে চাপা পড়ে এবং ডাল ভেঙে সজীব মিয়া (২৫) ও সুরুজ মিয়া (৭০) নামের দুজন নিহত হয়েছেন। বিকেলে সদর উপজেলার ঘাগড়া ইউনিয়নের মরাকুড়ি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয়রা জানান, বিকেলে কালবৈশাখী ঝড়ের সময় মরাকুড়ি বাজার সংলগ্ন স্কুলের পেছনে গাছের নিচে দাঁড়িয়ে আশ্রয় নেন নির্মাণ শ্রমিক সজীব মিয়া। এ সময় ঝড়ে গাছটি উপড়ে পড়লে গাছের নিচে চাপা পড়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান সজীব। অন্যদিকে একই এলাকায় একটি মাছের ঘেরের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন কৃষক সুরুজ মিয়া। এ সময় একটি ডাল ভেঙে পড়লে প্রাণ হারান তিনি।

কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম খান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

ধান কাটার সময় বিকেলে সদর উপজেলার বুলনপুর গ্রামে বজ্রপাতে মো. কাইমুল (৪০) নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

নওগাঁয় হঠাৎ কালবৈশাখী তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড হয়েছে কিছু এলাকা। রোববার (১১ মে) বিকেল ৫টার দিকে শুরু হয় এ তাণ্ডব। এতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে জেলায়। বিশেষ করে জেলার মান্দা, সাপাহার ও পতœীতলা উপজেলার কিছু এলাকার উপর দিয়ে এই ঝড় বয়ে যায়। ঝড় বৃষ্টির সময় বজ্রপাতে উপজেলার কুসুম্বা দিয়াড়াপাড়া গ্রামে জিলুর রহমান নামে এক যুবককে মৃত্যু হয়েছে। নিজের জমিতে কাজ করছিলেন জিল্লুর। ঝড় বৃষ্টি দেখে বাড়ি ফিরছিলেন তড়িঘড়ি করে। কিন্তু পথে ফাঁকা মাঠে বজ্রপাতে মারা যান তিনি। এ সময় আহত হন শফিকুল ইসলাম নামে এক যুবক। তাকে চিকিৎসার জন্য মান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়েছে।

বিকেল ৫টার দিকে জেলার আজমিরীগঞ্জে ড্রেনে গোসল করার সময় বজ্রপাতে সাজু মিয়া (২০) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। তিনি উপজেলার কাকাইলছেও ইউনিয়নের ডেমিকান্দি গ্রামের তজম আলী মিয়ার ছেলে।

কাটা ধান আনতে গিয়ে শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে বজ্রপাতে এক কৃষি শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অপর এক শ্রমিক। রোববার সন্ধ্যায় উপজেলার আন্ধারুপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত খবির উদ্দীন (৪৫) উপজেলার কাপাশিয়া এলাকার জালাল উদ্দীনের ছেলে। আহত সকুল উদ্দীন (২০) একই এলাকার জামাল উদ্দীনের ছেলে।