আগামী শনিবার দেশে পালিত হবে পবিত্র ঈদুল আজহা। মুসলমানদের অন্যতম ধর্মীয় এই উৎসবকে কেন্দ্র করে পশু কেনাকাটা, পরিবার-পরিজনের খরচ এবং উপহার সামগ্রী নিয়ে চলছে প্রস্তুতি। এসব বাড়তি খরচ মেটাতে বড় অঙ্কের রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন প্রবাসীরা।

বৃহস্পতিবার (৫ জুন) বাংলাদেশ ব্যাংক প্রকাশিত সর্বশেষ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়, চলতি জুন মাসের প্রথম তিন দিনেই দেশে এসেছে ৬০ কোটি ৪০ লাখ মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ রেমিট্যান্স। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ প্রায় ৭ হাজার ৪২৯ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ১২৩ টাকা হিসেবে)।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, ঈদুল আজহা সামনে রেখে সাধারণত গরু, ছাগল ও অন্যান্য কোরবানির পশু কেনা, নতুন পোশাক, উপহার এবং পারিবারিক ব্যয়ের জন্য প্রবাসীরা দেশে বেশি বেশি অর্থ পাঠান। এই সময় রেমিট্যান্স প্রবাহে সাধারণত ঊর্ধ্বগতি দেখা যায় এবং এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি।

অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, প্রবাসী আয় শুধু প্রবাসীদের পরিবারের জীবনযাত্রার মানই উন্নত করে না, দেশের সামগ্রিক অর্থনীতিতে তা গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে। ঈদ উপলক্ষে এই অর্থ গ্রামীণ অর্থনীতিতে সরাসরি প্রবাহিত হয়ে ব্যবসা-বাণিজ্যেও চাঙ্গা ভাব তৈরি করে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, এর আগে মে মাসে দেশে এসেছে ২৯৭ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স, যা দেশের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মাসিক প্রবাসী আয়। এর পরিমাণ বাংলাদেশি মুদ্রায় ৩৬ হাজার ৫৩১ কোটি টাকারও বেশি। আর চলতি বছরের মার্চে, ঈদুল ফিতর সামনে রেখে এসেছিল ইতিহাসের সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স—৩২৯ কোটি ৫৬ লাখ ডলার।

বিশ্লেষকদের মতে, ঈদকেন্দ্রিক ব্যয় বাড়া এবং প্রবাসীদের দেশে অর্থ পাঠানোর আগ্রহ বৃদ্ধি পাওয়াই এই প্রবাহ বৃদ্ধির প্রধান কারণ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, চলতি অর্থবছরের শুরু থেকে ৩ জুন পর্যন্ত মোট ২ হাজার ৮১১ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ২৯ দশমিক ৮০ শতাংশ বেশি। গত অর্থবছরের একই সময়ে রেমিট্যান্স এসেছিল ২ হাজার ১৬৬ কোটি ডলার।

বর্তমান অন্তর্র্বতীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর টানা আট মাস দুই বিলিয়ন ডলারের ওপরে রেমিট্যান্স এসেছে। আর মার্চ মাসে সেই অঙ্ক পেরিয়েছে তিন বিলিয়ন ডলারের ঘর। এতে রেমিট্যান্স খাতে ইতিবাচক ধারাবাহিকতা বজায় রয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।