যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে তৈরি পোশাক রফতানিতে বাংলাদেশ নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। চলতি বছরের প্রথম চার মাসে (জানুয়ারি থেকে এপ্রিল) মার্কিন বাজারে বাংলাদেশের পোশাক রফতানির প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২৯ দশমিক ৩৩ শতাংশ। প্রবৃদ্ধির হারে বাংলাদেশ এখন শীর্ষে।

যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ অফিস অব টেক্সটাইল অ্যান্ড অ্যাপারেলস (OTEXA) এই তথ্য জানিয়েছে। তাদের সর্বশেষ হালনাগাদ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এই সময়ে যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে মোট ২৬ বিলিয়ন (২ হাজার ৬২১ কোটি ৮০ লাখ) ডলারের পোশাক আমদানি করেছে। যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১০.৬৫ শতাংশ বেশি।

অটেক্সার হালনাগাদ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত প্রথম ৪ মাসে ২ হাজার ৬২১ কোটি ৮০ লাখ ডলারের তৈরি পোশাক আমদানি করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। যা এক বছর আগের তুলনায় প্রায় ১০.৬৫ শতাংশ বেশি।

একইসঙ্গে এপ্রিল পর্যন্ত ৪ মাসের রপ্তানি আয়ের হিসাবে চীনকে টপকে মার্কিন বাজারে শীর্ষ পোশাক রপ্তানিকারক দেশের জায়গা নিয়েছে ভিয়েতনাম। চীন থেকে যুক্তরাষ্ট্র আমদানি করেছে ৪৩৫ কোটি ৭৬ লাখ ডলারের পোশাক। যা বছর ব্যবধানে বেড়েছে শূন্য দশমিক ৬৬ শতাংশ। আর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ ভিয়েতনাম থেকে মার্কিন বাজারে পোশাক রপ্তানি হয়েছে ৫০৮ কোটি ৯১ লাখ ডলারের মূল্যের। যা ১৬.০৬ শতাংশ বেড়েছে বছর ব্যবধানে।

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রে বাজার দখলে অনেক পিছিয়ে থাকলেও আয় বৃদ্ধির বিচারে অবশ্য সবচেয়ে এগিয়ে বাংলাদেশ। বছর ব্যবধানে মার্কিন বাজারে বাংলাদেশি পোশাক রপ্তানির আয় ২৯ দশমিক ৩৩ শতাংশ বেড়েছে। যা শীর্ষ রপ্তানিকারক দেশ ভিয়েতনামের প্রায় দ্বিগুণ।

চলতি বছরের প্রথম চার মাসে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করেছে ২৯৮ কোটি ৩১ লাখ টাকার পোশাক। বাংলাদেশের পর সবচেয়ে বেশি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ভারতের, ২০ দশমিক ৩০ শতাংশ। আর ইন্দোনেশিয়ার আয় ১৫ দশমিক ৬০ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৬০ কোটি ১১ লাখ ডলারে।

একই সময়ে মার্কিন বাজারে পাকিস্তানি পোশাকের রপ্তানি আয় বেড়েছে ১৯ দশমিক ৭৯ শতাংশ। আর গত এপ্রিল পর্যন্ত চার মাসে রপ্তানি হয়েছে ১২৩ কোটি ৯ লাখ ডলার। এ ছাড়া কম্বোডিয়ার রপ্তানি আয় ১৯.৫৭ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৪ কোটি ৯৫ লাখ ডলারে।

পোশাক রপ্তানিকারক ও ব্যবসায়ীরা মনে করছেন, যুক্তরাষ্ট্রে অর্ডার বেড়েছে। কারণ চীন থেকে কিছু অর্ডার সরেছে। সেই সুযোগটা আমরা কাজে লাগাতে পেরেছি।

তবে এ সুবিধা যদি দীর্ঘমেয়াদে ধরে রাখতে চাই, তাহলে আমাদের আরও উন্নত প্রযুক্তি, দক্ষ শ্রমিক এবং পণ্যের বৈচিত্র্য নিশ্চিত করতে হবে। ক্রেতারা এখন বাংলাদেশকে নির্ভরযোগ্য সরবরাহকারী হিসেবে দেখছে। সময়মতো পণ্য সরবরাহ ও মান বজায় রাখায় আমরা ভালো অবস্থানে আছি। তবে ডলার সংকট, কাঁচামালের মূল্য বৃদ্ধি এবং লজিস্টিক সমস্যা এখনই সমাধান না হলে এই গতি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।