ফিলিস্তিনের গাজার উপত্যকায় ইসরায়েলের আগ্রাসন যেন কিছুতেই থামছে না। গতকালও (শুক্রবার) ৮ আগস্ট দিনভর ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর গোলাবর্ষণে ৭২ জন নিহত হয়েছেন। এসময় আহত হন প্রায় ৩১৪ জন। এতে মোট নিহতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৬০ হাজার ৩৩০ জনে। শুক্রবার সন্ধ্যার পর এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানে গাজায় মোট নিহতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৬০ হাজার ৩৩০ জনে। তাদের পাশাপাশি আহত হন আরও ১ লাখ ৫২ হাজার ৩৫৯ জন ফিলিস্তিনি।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, হাসপাতালে যেসব নিহত ও আহতকে আনা সম্ভব হয়েছে কেবল তাদেরকেই ধরা হয়েছে হিসেবের মধ্যে। ধ্বংসস্তূপের তলায় এবং সড়কে এমন অনেক মৃতদেহ পড়ে আছে—যাদের হাসপাতালে আনা সম্ভব হয়নি। প্রয়োজনীয় উদ্ধার সরঞ্জামের অভাব এবং ইসরায়েলি বাহিনীর বোমাবর্ষণ এজন্য দায়ী। ফলে ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানে আহত ও নিহতের মোট সংখ্যা আরও অনেক বেশি।
এদিন নিহত ৭২ জনের মধ্যে ১৬জন ত্রাণ নিতে গিয়ে নিহত হয়েছে। কারণ, খাদ্য ও ত্রাণ নিতে আসা ফিলিস্তিনিদেরও নির্বিচারে গুলি করছে ইসরায়েলি সেনারা। এ পর্যন্ত ত্রাণ নিতে গিয়ে গাজায় নিহত হয়েছেন মোট ১ হাজার ৭৭২ জন।
এ ছাড়াও সামরিক অভিযান চালানোর পাশাপাশি গাজায় খাদ্য ও ত্রাণ সামগ্রীর প্রবেশও সীমিত করেছে ইসরায়েল। ফলে সেখানে দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, অভিযানের শুরু থেকে এ পর্যন্ত গাজায় না খেতে পেয়ে এবং অপুষ্টিতে ভুগে মৃত্যু হয়েছে ২০১ জনের। এদের মধ্যে ৯৮ জনই শিশু।
এর আগে, গত বছরের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত গাজায় যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং তার সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে আগ্রাসনের জন্য আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার মামলার মুখোমুখিও হয়েছে ইসরায়েল। তবুও থেমে নেই তাদের বর্বরতা। এ নিয়ে বিশ্বব্যাপী নিন্দার ঝড় বইছে।