সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে অগ্রণী ব্যাংকের মতিঝিল প্রিন্সিপাল শাখায় সংরক্ষিত দুটি লকার থেকে মোট ৮৩১ দশমিক ৬৭ ভরি (৯৭০৭.১৬ গ্রাম) স্বর্ণালংকার পাওয়া গেছে। এসব লকারে ছিল সোনার নৌকা-হরিণসহ বিভিন্ন গহনা। এছাড়া পূবালী ব্যাংকে থাকা একটি লকার থেকে পাওয়া গেছে পাটের ব্যাগ।
বুধবার (২৬ নভেম্বর) দুদক মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।
দুদকের আবেদনের প্রেক্ষিতে পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে বলে জানান দুদক মহাপরিচালক।
এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, লকারে পাওয়া স্বর্ণালংকারগুলোর কিছু শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত, কিছু তার মেয়ের এবং কিছু তার বোনের নামে চিহ্নিত। প্রতিটি অলংকারে আলাদা মার্কিং রয়েছে। আমাদের অনুসন্ধান দল এগুলো আলাদাভাবে যাচাই করবে। অভিযোগের সঙ্গে যে অংশগুলো সম্পর্কিত, শুধুমাত্র সেগুলোই বর্তমান অনুসন্ধানে বিবেচনায় নেওয়া হবে। প্রয়োজন হলে অন্য অলংকারগুলো পৃথক অনুসন্ধানের আওতায় আসতে পারে।
আদালত নির্দেশ দেন—একজন জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, অনুসন্ধান তদারকি কর্মকর্তা, বাংলাদেশ ব্যাংকের বুলিয়ন শাখা মনোনীত স্বর্ণ বিশেষজ্ঞ, এনবিআর-এর কর গোয়েন্দা ও সিআইসি-এর মনোনীত দুই কর্মকর্তা এবং সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে তিনটি লকার খোলার জন্য।
নির্দেশ অনুযায়ী লকারগুলো খোলা হয়।
দুদকের তথ্য অনুযায়ী— পূবালী ব্যাংকের লকারে পাওয়া গেছে একটি খালি ছোট পাটের ব্যাগ। অগ্রণী ব্যাংকের লকারে পাওয়া গেছে প্রায় ৪৯২৩.৬০ গ্রাম স্বর্ণালংকার। অগ্রণী ব্যাংকের লকারে পাওয়া গেছে প্রায় ৪৭৮৩.৫৬ গ্রাম স্বর্ণালংকার।
দুদক জানায়, লকারে থাকা চিরকুট ও বর্ণনা থেকে ধারণা করা হচ্ছে—এই স্বর্ণালংকারগুলোর মালিকানা শেখ হাসিনা ছাড়াও তার পরিবারের সদস্য শেখ রেহানা সিদ্দিকী, সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, সজীব ওয়াজেদ জয় এবং ববির। ইনভেন্টরি তালিকা বিশদভাবে পর্যালোচনা করে প্রতিটি আইটেমের মালিকানা পৃথকীকরণ ও সুনির্দিষ্ট করা হবে। স্বর্ণ বিশেষজ্ঞের মাধ্যমে মূল্য নির্ধারণের পর সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মালিকানা ও সম্ভাব্য আইনগত দায় নিরূপণ করা হবে।
গত বছর ৫ আগস্ট ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে আওয়ামী সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার শেখ হাসিনা ও তার পরিবার সদস্যদের কর ফাঁকি ও দুর্নীতির তদন্ত শুরু করে। এর অংশ হিসেবে শেখ হাসিনার নামে থাকা বিভিন্ন ব্যাংকের লকার জব্দ করে সিআইসি।
১০ সেপ্টেম্বর সিআইসি রাজধানীর সেনা কল্যাণ ভবনে অবস্থিত পূবালী ব্যাংকের মতিঝিল করপোরেট শাখায় অভিযান চালিয়ে শেখ হাসিনার নামে থাকা ১২৮ নম্বর লকারটি জব্দ করে। এসময় পূবালী ব্যাংকের ওই শাখায় শেখ হাসিনার দুটি ব্যাংক হিসাবও জব্দ করে। একটি হিসাবে ১২ লাখ টাকা এফডিআর এবং অন্যটিতে ৪৪ লাখ টাকার সন্ধান পায় তারা। এসব হিসাব তখন জব্দ করা হয় এবং টাকা উত্তোলন নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।












