রাজধানীর কারওয়ানবাজারে প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারের কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুর চলছে। এর মধ্যে ডেইলি স্টার ভবনে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে প্রথম আলোর অফিসে হামলা শুরু হয়। পরে ডেইলি স্টারে হামলা চালানো হয়। ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদির মৃত্যুর সংবাদ আসার পর একদল লোক পত্রিকাগুলোর অফিসের সামনে গিয়ে জড়ো হয় এবং হামলা চালায়।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া লাইভ ভিডিওতে লাঠিসোটা নিয়ে হামলা, ভাঙচুর করতে দেখা যায়। প্রথম আলোর সামনের সড়কেও আগুন জ্বালাতে দেখা গেছে।এছাড়া, অফিস দুইটির মধ্যে কয়েকজন কর্মী আটকা পড়েছেন বলে জানা যাচ্ছে।
ভবনটির নিচের তিনটি তলায় যখন আগুন জ্বলছিল, তখন প্রাণ বাঁচাতে সংবাদকর্মীরা ছাদে গিয়ে আশ্রয় নেন। এই ভবনে আটকে পড়া একাধিক সংবাদকর্মী সমকালকে জানান, ভবনের চারতলায় পত্রিকাটির নিউজ রুমে বেশ কয়েকজন সংবাদকর্মী আটকে পড়েন এবং আগুনের ধোঁয়ায় অসুস্থ হয়ে পড়েন।
ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণকক্ষের সদস্য এম এ শাজাহান রাত ২টায় সমকালকে বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় ডেইলি স্টার ভবনে আগুন নেভানোর চেষ্টা চলছে। বিভিন্ন স্থান থেকে ফোনকল পাচ্ছি। ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিসের ১০টি টিম কাজ করছে। আগুন দেওয়ার খবর পাওয়ার পর ফায়ার সার্ভিস রওনা হলেও পথে বাধার সম্মুখীন হয়। ফলে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করতে দেরি হয়। ডেইলি স্টার ভবনে আটকে পড়া সংবাদকর্মীদের মধ্যে রাত আড়াইটা পর্যন্ত ১০ জনকে ক্রেন ব্যবহার করে উদ্ধার করা হয়েছে। আরও অন্তত ৩০ জন সাংবাদিক ভবনটির ছাদে আটকা রয়েছেন।
তেজগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ক্যশৈন্যু মারমা রাত ২টায় সমকালের সঙ্গে আলাপকালে বলেন, আমি এখন ডেইলি স্টার ভবনের সামনে রয়েছি। এর আগে তিনি সাংবাদিকদের জানান, আমাদের আরেকটি টিম প্রথম আলো কার্যালয়ে হামলাকারীদের নিবৃত করার চেষ্টা চালিয়েছিলাম। কিন্তু তাদের নিবৃত করা সম্ভব হয়নি। কয়েকশ লোক একত্রিত হয়ে হামলা চালিয়েছে। তবে এ হামলায় কারা অংশ নিয়েছেন তা নিশ্চিত করতে পারেননি তিনি।
ডেইলি স্টার ভবনে আটকে পড়া ডেইলি স্টারের সাংবাদিক জাইমা ইসলাম রাত ১টার দিকে ফেসবুকে লিখেছেন, ‘আমি আর শ্বাস নিতে পারছি না। চারদিকে খুব বেশি ধোঁয়া। আমি ভেতরে আটকে আছি। তোমরা আমাকে মেরে ফেলছ।’
রাত আড়াইটায় ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে জানানো হয়, প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার ভবনের আগুন এখনও পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। তবে চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।












