লক্ষ্মীপুরের ভবানীগঞ্জের চরমনসা এলাকায় বিএনপি নেতার বসতঘরে আগুন দেওয়ার ঘটনায় দগ্ধ কিশোরী সালমা আক্তার স্মৃতি জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে মারা গেছে। এ নিয়ে আগুন দেওয়ার ঘটনায় দুজনের প্রাণ গেল। এর আগে একই ঘটনায় তার ছোট বোন আয়েশা আক্তার মারা যায়।

বুধবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে চিকিৎসাধীন স্মৃতি মারা যান বলে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. শাওন বিন রহমান নিশ্চিত করেন।

তিনি জানান, লক্ষ্মীপুরের আগুনের ঘটনায় বিথী (১৩) ও স্মৃতি (১৭) নামে দুই জনকে শনিবার ভোরে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিল। চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় স্মৃতি। তার শরীরের ৯০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল। আর বিথীর হাত ও পায়ের সামান্য অংশ দগ্ধ হয়েছিল। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।

তিনি আরও জানান, প্রথম থেকেই স্মৃতির অবস্থা আশঙ্কাজনক ছিল। তাকে আইসিইউতে ভর্তি রাখা হয়েছিল। সেখানে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছিলেন তিনি।

এর আগে, গত ১৯ ডিসেম্বর রাতে ভবানীগঞ্জের চরমনসা গ্রামের সুতারগোপ্তা এলাকায় দুর্বৃত্তরা বাইরে থেকে দরজায় তালা লাগিয়ে পেট্রল ঢেলে বিএনপি নেতা বেলাল হোসেনের বসতঘরে আগুন দেয়। এতে ঘর ও আসবাবপত্র পুড়ে যায় এবং আগুনে পুড়ে ঘটনাস্থলেই ছোট মেয়ে আয়েশা আক্তারের মৃত্যু হয়।

এই ঘটনায় বিএনপি নেতা বেলাল হোসেন, তার বড় মেয়ে স্মৃতি এবং অষ্টম শ্রেণিতে পড়ুয়া মেজো মেয়ে সায়মা আক্তার বিথী (১৩) দগ্ধ হয়। বেলাল হোসেন লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। স্মৃতি ও বিথিকে ঢাকায় জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নিয়ে আসে স্বজনরা।

এর আগে মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) রাতে এ ঘটনায় বিএনপি নেতা বেলাল বাদী হয়ে অজ্ঞাতদের আসামি করে সদর মডেল থানায় মামলা করেন। ঘটনার পর থেকেই পুলিশ ঘটনাটি তদন্তে কাজ করছেন।

এদিকে ঘটনার পর জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে দরজায় তালা ও পেট্রল ঢেলে আগুন দেওয়ার সত্যতা পাওয়া যায়নি বলে জানানো হয়। যদিও এরপর পুলিশ তদন্তে গিয়ে আগুনে পুড়ে যাওয়া ধ্বংসস্তুপে তল্লাশি চালিয়ে তিনটি তালা উদ্ধার করেছে বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. রেজাউল হক।

দুটি তালা লক ও একটি খোলা অবস্থায় পাওয়া গেছে। তবে পেট্টোল ঢেলে আগুন লাগানোর আলামত পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) হোসাইন মোহাম্মদ রায়হান কাজেমী বলেন, ঘটনার দিন আগুনে পুড়ে আয়েশার মৃত্যু হয়। এখন চিকিৎসাধীন অবস্থায় দগ্ধ স্মৃতিও মারা গেছে৷ নিহতের বাবা বাদী হয়ে থানা মামলা করেছেন। ঘটনাটি তদন্ত চলছে।