অস্ট্রেলিয়ার সরকারের সাবেক এমপি জুলিয়া ব্যাঙ্কস বলেছেন, ২০১৭ সালে পার্লামেন্ট ভবনে বর্তমান মন্ত্রিসভার একজন মন্ত্রী তাকে ‘অযাচিতভাবে স্পর্শ’ করেছিলেন। নিজের লেখা এক স্মৃতিকথায় ব্যাঙ্কস বলেছেন, সংসদে অধিবেশন চলাকালীন ওই পুরুষ এমপি দূরে চলে যাওয়ার আগে তার হাত আমার পায়ের ওপর রেখেছিলেন।
এক বিবৃতিতে দেশটির প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসনের কার্যালয় বলেছে, তারা আগে এই অভিযোগের ব্যাপারে অবগত ছিলেন না। তবে এ ধরনের আচরণ সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য।
নিজের লেখা স্মৃতিকথায় অভিযুক্ত মন্ত্রীর পরিচয় প্রকাশ করেননি ব্যাঙ্কস। তবে তিনি বলেছেন, ওই মন্ত্রী এখনও মন্ত্রিসভায় আছেন।
জুলিয়া ব্যাঙ্কস বলেছেন, তিনি এবং সরকারের অন্যান্য এমপিরা সংসদ ভবনে এক রাতে ভোটাভুটির জন্য অপেক্ষা করছিলেন। এ সময় ওই মন্ত্রী চলে আসেন, আমার পাশে বসেন এবং আমার হাঁটুর ঠিক ওপরের অংশে তার হাত রাখেন এবং ধীরে ধীরে তা ওপরের দিকে নিতে থাকেন। এক পর্যায়ে উরুর দিকে ভেতরের অংশে হাত দেন এবং আমার পা উঁচুতে তোলেন।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি বলছে, বৃহত্তর অস্ট্রেলীয় রাজনীতিতে এবং স্কট মরিসন নেতৃত্বাধীন রক্ষণশীল সরকারের নারীদের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেছে ব্যাঙ্কসের এই অভিযোগ।
সংসদ ভবনে দেশটির সরকারের জ্যেষ্ঠ একজন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর চলতি বছরের শুরুর দিকে অস্ট্রেলিয়ায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মি টু আন্দোলন শুরু হয়। অস্ট্রেলিয়ার রাজনীতিতে যৌনতা এবং নারী বিদ্বেষের পুরোনো অভিযোগ রয়েছে। এ নিয়ে বিভিন্ন সময়ে আলোচনা-সমালোচনাও হয়েছে।
২০১৮ সালে লেবার পার্টি ছাড়েন এমপি জুলিয়া ব্যাঙ্কস। নেতৃত্বে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ম্যালকম টার্নবুল ক্ষমতাচ্যুত হন এবং ক্ষমতায় আসেন স্কট মরিসন। লেবার পার্টি ছাড়ার সময় এক বক্তৃতায় জুলিয়া তাকে ‘নিপীড়ন এবং ভীতিপ্রদর্শন’র নিন্দা জানিয়েছিলেন।
সাবেক এই আইনপ্রণেতা বলেছিলেন, সংসদে নারীদের প্রতি যে ধরনের দৃষ্টিভঙ্গি দেখানো হয়, তা করপোরেট দুনিয়া থেকে কয়েক দশক পেছনের কথাই তুলে ধরে।
অস্ট্রেলিয়ার রাজনীতির নারীবিরোধী সংস্কৃতি নিয়ে নিজের লেখা বই ‘পাওয়ার প্লে: ব্রেকিং থ্রু বায়াস, ব্যারিয়ার্স অ্যান্ড বয়েজ ক্লাবে’ আলোচনা করেছেন জুলিয়া।