কোনো গডফাদারের দিকে তাকিয়ে নির্বাচন করেন না বলে মন্তব্য করেছেন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সরকারদলীয় মেয়র প্রার্থী সেলিনা হায়াত আইভী। তিনি বলেন, গতকাল বন্দরে তৈমুর প্রচারণা চালিয়েছেন, সেলিম ওসমানের জাতীয় পার্টির চারজন চেয়ারম্যান তার সঙ্গে ছিলেন। এতে প্রমাণিত হয় নারায়ণগঞ্জে যে গুঞ্জন ছিল তৈমুর আলম খন্দকার গডফাদার শামীম ওসমানের ক্যান্ডিডেট, গতকাল তা প্রমাণিত হয়েছে।
শনিবার বন্দরের ২৪নং ওয়ার্ডের দেউলি চৌরাপাড়া এলাকায় নির্বাচনি প্রচারণায় সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে আইভী এসব কথা বলেন।
আইভী আরও বলেন, হাইকমান্ড কালকে সব দেখেছে। এখানে অনুষ্ঠান হয়েছে, পত্রিকায়ও খবর এসেছে। তারা দেখেছেন এবং তারা এ বিষয়ে দেখবেন। আমি বলতে চাই- আমি নির্বাচন করি জনতার শক্তিতে। জনতাই আমার শক্তি, দল আমার মনোবল। এসব মিলিয়ে আমি নির্বাচন করি। আমি কোনো গডফাদারের দিকে তাকিয়ে নির্বাচন করি না। আমি বলেছি কালকে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানরা প্রকাশ্যে নেমেছেন। এতে প্রমাণিত হয়- কারা তার সঙ্গে আছেন, কারা তাকে সাপোর্ট দিচ্ছেন।
দলের সমর্থন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগে দ্বন্দ্ব স্পষ্ট হলো কিনা জানি না। সব নেতাকর্মী আমার সঙ্গে। প্রতিটি ওয়ার্ড লেভেল পর্যন্ত নেতাকর্মীরা আমার পাশে আছে। একমাত্র তিনি (শামীম ওসমান) দলের বাইরে গিয়ে তার লোকজনকে তৈমুর সাহেবের সঙ্গে দিচ্ছেন।
আইভী আরও বলেন তৈমুর আলম খন্দকার গডফাদার শামীম ওসমান ও সেলিম ওসমানের প্রার্থী। তিনি বিএনপিরও প্রার্থী নন, জনতার প্রার্থীও নন। শামীম ওসমান তাকে প্রার্থী করেছেন। উনি বিএনপির প্রার্থী হলে ধানের শীষেই নির্বাচন করতেন। উনি গডফাদারের প্রার্থী। তিনি দন্তবিহীন গডফাদার, নতুন করে আবার উত্থান হতে শুরু করেছেন।
তিনি বলেন, ২০১৬ সালে শামীম ওসমান ধানের শীষের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করেছেন, নৌকার বিরুদ্ধে ধানের শীষে সিল মেরেছেন। উনি ১৯৯৬ সালে নাজমা রহমানের নৌকা কেড়ে নিয়ে তার ভাইয়ের পক্ষে লাঙ্গলের হয়ে ব্যালট বাক্স লুট করেছেন। উনি কেমন আওয়ামী লীগ করেন, কিসের আওয়ামী লীগ করেন। উনি সুবিধাবাদী।
আইভী বলেন, গডফাদাররা আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে, মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে অপশক্তি, আনাগোনা শুরু হয়েছে সন্ত্রাসীদের। যেভাবে আমরা আগে এসব অপশক্তিকে দমন করেছি, সেভাবে আমরা আবার এই দন্তবিহীন বাঘকে, হাতিকে দমন করতে চাই। সন্ত্রাসীদের দমন করতে চাই।
উন্নয়ন প্রসঙ্গে আইভী বলেন, আমি বন্দরবাসীর জন্য সুখবর দিতে চাই। সেটি হলো- কদমরসুল ব্রিজ হয়ে যাবে অচিরেই। কোভিডের জন্য পিছিয়ে গিয়েছিল কিন্তু আগামী কয়েক মাসের মধ্যে টেন্ডার হয়ে যাবে।
তিনি বলেন, নদীর এপারে আমি প্রচুর পার্ক ও খেলার মাঠ করেছি। আমি রাস্তাঘাট, ড্রেন, খেলার মাঠসহ প্রচুর কাজ করেছি। বন্দরে প্রতিটি ওয়ার্ডে খেলার মাঠ করেছি, অনেক ওয়ার্ডে ২টা মাঠও আছে। আমাকে এবার শীতলক্ষ্যা নদী নিয়ে কাজ করতে হবে। নদীর দুইপাড়ে বাঁধাই করে দেব। বর্জ্য ব্যবস্থাপনা একটা সমস্যা ছিল। আমরা বন্দরে ৭৬ একর জায়গা নিয়েছি, জালকুড়িতে বিশাল জায়গা একোয়ার করেছি। এখানে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা হবে। এসব মেগা প্রজেক্ট সম্পন্ন করার জন্য আমি আবার সুযোগ চাই। আমি একটি দল করি সত্য, আমার একটা দলীয় পরিচয় আছে, কিন্তু আমি জনগণের কাজ করেছি, তাই জনগণ আমার সঙ্গে আছে।